মহাপুণ্যময় রজনী পবিত্র শবে মেরাজ

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক॥ যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশে আজ বুধবার দিবাগত রাতে মুসলিম বিশ্বের মতো বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরাও কোরআনখানি, নফল নামাজ, জিকির, ওয়াজ মাহফিল, দোয়া ও বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে পবিত্র শবে মেরাজ উদযাপন করবেন।

আজ রাত এক অলৌকিক অসামান্য মহাপুণ্যময় রজনী। এ রজনী মহাপবিত্র মহিমান্বিত লাইলাতুল মেরাজের। এ রাতে আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত জিবরাঈল আলাহিস্ সালামের সাথে পবিত্র কাবা হতে পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস হয়ে সপ্তাকাশের উপর সিদরাতুল মুনতাহা হয়ে সত্তর হাজার নূরের পর্দা পেরিয়ে আরশে আজিমে মহান আল্লাহ তায়ালার দিদার লাভ করেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে দুনিয়াতে প্রত্যাবর্তন করেন। তিনি অবলোকন করেন সৃষ্টি জগতের সকল কিছুর অপার রহস্য। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জীবনের সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা ‘মেরাজ’।

মেরাজ ইসলামের ইতিহাসে এমনকি পুরো নবুওয়াতের ইতিহাসেও এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। কারণ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ও রাসূল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছাড়া অন্যকোনো নবী এই পরম সৌভাগ্য লাভের সুযোগ পাননি। এ মেরাজ রজনীতেই মানবজাতির শ্রেষ্ঠ ইবাদত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হয়। এ রাত ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও যথাযথ মর্যাদায় মুসলিম জাহানের সাথে এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরাও এ রাতে কোরআনখানি, নফল সালাত, জিকির-আসকার, ওয়াজ মাহফিল, দোয়া-দরুদ পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে পবিত্র শবে মেরাজ পালন করবেন।

মেরাজ শব্দটি আরবি, অর্থ ঊর্ধ্বারোহণ। এ মেরাজ অর্থ দাঁড়ায়- সপ্তম আসমান, সিদরাতুল মুনতাহা, জান্নাত-জাহান্নাম পরিদর্শন এবং ধনুক কিংবা তার চেয়ে কম দূরত্বে আল্লাহ তাআলার দর্শন লাভ। এ ছিল আল্লাহ তা‘আলার মহান কুদরত, অলৌকিক নিদর্শন, নবুওয়াতের সত্যতার পক্ষে এক বিরাট আলামত। জ্ঞানীদের জন্য উপদেশ, মোমিনদের জন্য প্রমাণ, হেদায়েত, নেয়ামত, রহমত, মহান আল্লাহর একান্ত সান্নিধ্যে হাজির হওয়া, ঊর্ধ্বালোক সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান অর্জন, অদৃশ্য ভাগ্য সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান লাভ, ইহকাল ও পরকাল সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন, স্বচক্ষে জান্নাত-জাহান্নাম অবলোকন, নভোমন্ডল পরিভ্রমণ এবং সর্বোপরি এটিকে একটি অনন্য মুজিযা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।

এ রাত খুবই ফজিলতের রাত। অতএব, এ রাতে যতদূর সম্ভব জেগে নফল নামাজ, জিকির-আযকার, কুরআন তিলওয়াত ও দরুদ শরীফ ইত্যাদি পাঠ করা এবং নফল নিয়তে দিবাভাগে রোজা রাখা ভালো, এগুলো ব্যতীত এই রাত্রে অন্যকোনো প্রকার শরীয়তবিরোধী রসম-রেওয়াজে লিপ্ত হওয়া যাবে না এবং এ রাতকে ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট করা।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ বলা হয়েছে, পবিত্র শবে মেরাজ উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগ বুধবার বাদ আসর বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে ‘লাইলাতুল মেরাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক এক ওয়াজ ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

সেখানে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মহিউদ্দিন কাসেম মেরাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বিষয়ে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করবেন। অনুষ্ঠানে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সচিব কাজী নূরুল ইসলাম সভাপতিত্ব করবেন।

Print Friendly

Related Posts