বরিশালে অটোরিকশা চোরচক্রের মূলহোতা আলামিন আটক

খান মাইনউদ্দিন, বরিশাল ব্যুরো: ঝালকাঠির নলছিটিতে ব্যাটারীচালিত অটোরিকশা চুরির অভিযোগে আন্তঃজেলা চোরচক্রের মূলহোতা আলামিন ফকির (৩৬) আটক করেছে পুলিশ।

শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার দপদপিয়া এলাকা থেকে চোরাই অটোরিকশাসহ তাকে আটক করা হয়। এরআগেও আলামিনের গ্যারেজ থেকে ৮টি চোরাই অটোরিকশা, যন্ত্রাংশ ও ইয়াবা সেবনের সরঞ্জাম উদ্ধার করা হলেও ওই ঘটনায় রহস্যজনক কারণে কোন মামলা করেনি পুলিশ।

আটককৃত আলামিন ফকির উপজেলার শেখেরকাঠি গ্রামের কাদের ফকিরের ছেলে।

জানা গেছে, বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে থেকে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে চালককে অচেতন করে একটি অটোরিকশা চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর বিভিন্নভাবে খোঁজখবর নিয়ে দপদপিয়ায় আলামিনের গ্যারেজে এসে চুরি হওয়া অটোরিকশাটির সন্ধান পেয়ে চালক মো. ইব্রাহিম শুক্রবার দুপুরে নলছিটি থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেন। পুলিশ আলামিনের গ্যারেজে অভিযান চালিয়ে চুরি যাওয়া অটোরিকশাসহ তাকে আটক করে।

অটোরিকশা চালক বাকেরগঞ্জের কলসকাঠি ইউনিয়নের দূর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. ইব্রাহিম জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে আলামিনের দুই সহযোগী যাত্রী বেশে কলসকাঠি থেকে বাকেরগঞ্জ সদরে আসার জন্য অটোরিকশায় ওঠে। কিছু দূর যাওয়ার পর তাদের অন্যান্য সহযোগীদের সঙ্গে পরিকল্পনা অনুযায়ী পূর্বনির্ধারিত স্থানে অটোরিকশা থামায়। সেখানে নেমে তারা চা-জুস জাতীয় খাবার খায়। আর তখনই কৌশলে তার (ইব্রাহিম) সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করে। এরপর বিশ্বস্ততা অর্জন করে বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে একটি রেস্টুরেন্টে তাদের সঙ্গে তাকেও খাবার খেতে আমন্ত্রণ জানায়। তিনি এতে রাজি হলে চেতনানাশক মেশানো খাবার খাইয়ে তাকে অজ্ঞান করে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায় চোরচক্রের ওই দুই সদস্য।

পরে অচেতন অবস্থায় স্থানীয়রা সড়কের পাশ থেকে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার জ্ঞান ফিরলে অটোরিকশাটি খোঁজাখুজি শুরু হয়। এরপর শুক্রবার দুপুরে দপদপিয়া এলাকায় আলামিনের গ্যারেজে অটোরিকশাটি দেখতে পেয়ে পুলিশকে জানালে তারা চুরি হওয়া অটোরিকশাসহ আলামিনকে আটক করে।

স্থানীয়রা জানান, এই গ্যারেজে চোরাই অটোরিকশা এনে সেগুলোর রং, ইঞ্জিন নম্বর, চেসিস নম্বর পরিবর্তন করা হয়। এরপর ভূয়া কাগজ তৈরি করে সেগুলো বিক্রি করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রকাশ্যে আলামিন ফকির এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল। কিছুদিন আগে আলামিনের গ্যারেজ থেকে ৮টি চোরাই অটোরিকশা জব্দ করে পুলিশ। ওই ঘটনায় কোন মামলা না করে পুলিশ তিনটি অটোরিকশা কাগজপত্র দেখে তিন ব্যক্তিকে দিয়ে দিয়েছেন।

তারা আরো জানান, কিছুদিন আগে স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিসের কর্মীরা আলামিন ফকিরের বিদ্যুৎ চুরির ঘটনাটি হাতেনাতে ধরে ফেলেন। সে যাত্রায় জরিমানা দিয়ে মুক্তি পায় তিনি। তারপরও আলামিন ফকির ওই লাইনের বিদ্যুৎ চুরি করে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করতেন।

নলছিটি থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, অটোরিকশা চুরি ঘটনায় আলামিনকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

 

 

Print Friendly

Related Posts