রোমাঞ্চকর রাতের অপেক্ষা মেসিদের

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ বিশ্বকাপের পর সময়ের দুই তারকা ফুটবলার পল পগবা ও লিওনেল মেসি আবার মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে ওল্ড ট্রাফোর্ডে আজ মুখোমুখি হতে যাচ্ছে মেসির বার্সেলোনা ও পগবার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।

একই সময়ে নেদারল্যান্ডসের আমস্টার্ডামে স্বাগতিক আয়াক্সের মুখোমুখি হবে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর জুভেন্টাস।

চার দলেই তারকা খেলোয়াড়ের অভাব নেই। তবে ক্যামেরার মেইন ফোকাস যে মেসির উপরেই থাকবে তা না বললেও চলে। বার্সা অধিনায়কের সাম্প্রতিক ফর্ম ইউনাইটেড কোচ ওলে গানার সুলশারের দুশ্চিন্তার কারণ হতে বাধ্য। মৌসুমে পাঁচবারের এই বর্ষসেরা ৪০ ম্যাচে করেছেন ৪৩ গোল, শেষ ৬ ম্যাচে ১০টি। ইংলিশ দলের বিপক্ষে মেসির রেকর্ডের ধারেকাছে নেই কেউ। তার ২২ গোলের রেকর্ডের পাশে একমাত্র দুই অঙ্ক স্পর্শকারী স্কোরার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর গোল ১২টি। মেসির সঙ্গে আজ মাঠে দেখা যেতে পারে ওউসমান ডেম্বেলেকে।

রোনালদোর খেলা নিয়ে শঙ্কা কাটেনি। দুই সপ্তাহ আগে পর্তুগালের হয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচে উঁরুর চোটে পড়েন রোনালদো। এরপর থেকে ছিলেন বিশ্রামে। গতকাল অবশ্য দলের সঙ্গে তাকে অনুশীলনে দেখা গেছে।

আজ মাঠে নামতে যাওয়া চার দলেরই শেষ আটের লড়াইটা ছিল দুর্দান্ত। আয়াক্স ঘরের মাঠে ২-১ গোলে হেরেও সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর মত দুর্গে রিয়াল মাদ্রিদকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে বিষ্ময় উপহার দিয়ে শেষ আটে জায়গা করে নেয় ডাচ জায়ান্টরা। নিজেদের উপর দলটির আত্মবিশ্বাস চরমে।

শেষ ষোলোয় জুভেন্টাসের ঘুরে দাঁড়ানো ছিল আরো বিষ্ময়কর। বিশ্বের অন্যতম সেরা রক্ষণ বলা হয় যাদের সেই অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের মাঠ থেকে দুই গোলে পিছিয়ে পড়ার পর ঘরের মাঠে ৩-০ গোলে জেতাটা সহজ কোনো কাজ ছিল না। রোনালদোর হ্যাটট্রিকে সেই কাজই করেছিল মাসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রির দল। ঘরোয়া লিগে আর এক পয়েন্ট হলেই শিরোপা নিশ্চিত হবে জুভদের। কিন্তু তাদের আসল লক্ষ্য যে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ তা বুঝতে কারো বাকি নেই। শেষ পাঁচ মৌসুমে তৃতীয়বারের মত সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে তাই রোনালদোর দলে থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। শেষ পর্যন্ত অবশ্য রোনালদোর পাওয়ার প্রশ্নে আশা হারাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন অ্যালেগ্রি। এ পর্যন্ত দুই দলের ১২ বারের সাক্ষাতে ৬-২ ব্যবধানে এগিয়ে ইতালিয়ান জায়ান্টরা। ডাচ দলটির সর্বশেষ জয় অনেক আগে, ১৮৭৪ সালে তাদের সেই স্বর্ণযুগে।

বার্সা ও ইউনাইটেডের শেষ ষোলোও কম রোমাঞ্চকর ছিল না। ঘরের মাঠে ২-০ গোলে হারের পর পিএসজির মত দলকে তাদের মাঠে গিয়ে তিন গোল দিয়ে আসা সোজা কথা নয়। আর লিঁওর মাঠে গোলশূন্য ড্র করে আসা বার্সা ন্যু ক্যাম্পে ফরাসি প্রতিপক্ষকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে দেয়।
ঘরের মাঠ হলেও সাম্প্রতিক ফর্মের বিবেচনায় বার্সাকেই এগিয়ে রাখতে হচ্ছে। শেষ পাঁচ ম্যাচের তিনটিতেই যেখানে হেরেছে ম্যান ইউ, সেখানে টানা ১৬ ম্যাচ অপরাজিত বার্সা।

স্বাগতিক দলের জন্য সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার নাম লিওনেল মেসি। আসরের যৌথ সর্বোচ্চ গোলদাতার কাছেই সর্বশেষ দুইবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপাস্বপ্ন চুর হয় ইউনাইটেডের। ২০০৯ ও ২০১১ সালের ফাইনালে মেসির কাছেই হারতে হয়েছিল রেড ডেভিলদের। মেসি প্রশ্নে কোন ওলে গানার সুলশারের সাবলীল উত্তর, ‘মেসি অসাধারণ খেলোয়াড় এবং সে ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে নাম লেখাতে যাচ্ছে। তাকে আটকে রাখা কঠিন হবে, তবে অসম্ভব নয়।

Print Friendly

Related Posts