নুসরাত হত্যায় গ্রেপ্তার ১৩, মাকসুদকে আ’লীগ থেকে বহিস্কার

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় এজহারভূক্ত আরও দুই আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এর মধ্যে অধ্যক্ষের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত শাহাদাত হোসেন শামীমকে শুক্রবার রাত ১টার দিকে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার শামীম সোনাগাজী ইসলামীয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা ছাত্রলীগের সভাপতি (সিরাজ উদ দৌলা ঘোষিত কমিটি)। এর আগে রাত ৯টার দিকে মামলার ৫ নম্বর আসামি জাবেদ হোসেনকে ফেনী শহরের রামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।

এছাড়া একইদিন মামলার অন্যতম আসামী নূর উদ্দিনকে শুক্রবার সকালে ময়মনসিংহের ভালুকা সিড স্টোর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছিলো পিবিআই সদস্যরা। এ নিয়ে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাদের মধ্যে ৯ জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এদিকে এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত সৌনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা মকসুদ আলমকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।

মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল সিরাজ উদ দৌলার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন নূর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম। যৌন নির্যাতনের অভিযোগে গত ২৭শে মার্চ প্রিন্সিপাল সিরাজ গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার মুক্তির দাবিতে ‘সিরাজ উদ দৌলা সাহেবের মুক্তি পরিষদ’ নামে কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির সদস্য ছিলেন নূর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম। তাদের নেতৃত্বে প্রিন্সিপালের মুক্তির দাবিতে গত ২৮ ও ৩০শে মার্চ উপজেলা সদরে দু’দফা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। তারা নুসরাতের পরিবারকে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে নুসরাত হত্যা মামলার পাঁচ নম্বর আসামি জাবেদ হোসেনকে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফেনী শহরের রামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। এ নিয়ে এ মামলায় ১৩ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। এদের মধ্যে ৭ জন এজহারভূক্ত আসামী। গ্রেপ্তার ১৩ জনের মধ্যে ৯ জন আসামী রিমান্ডে রয়েছে। একজনের রিমান্ড আবেদন করেছে। অপর তিনজনকে আজ বিকাল নাগাদা আদালতে তোলা হতে পারে বলে পিবিআই জানিয়েছে।

অপরদিকে নুসরাত হত্যার অন্যতম আসামি আওয়ামী লীগ নেতা ও সৌনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর মকসুদ আলমকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। শুক্রবার রাতে সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের প্যাডে সভাপতি-সম্পাদক স্বাক্ষরিত পত্রে এ তথ্য গণমাধ্যমকে জানানো হয়। মাকসুদ আলম পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক) ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার ফকিরাপুল থেকে মাকসুদকে গ্রেপ্তার করেছিলো পিবিআই। শুক্রবার বিকালে তাকে ফেনীর আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আগামী ১৫ই এপ্রিল রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য্য করেন আদালত।

নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার ঘটনার পর গত ৮ই এপ্রিল তার বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে।

Print Friendly

Related Posts