জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে জনমত সৃষ্টির আহ্বান

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ শ্রীলঙ্কায় সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে জনমত সৃষ্টি ও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে গণভবনে ব্রুনেই-এ সরকারি সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি।

সম্প্রতি শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমি এই নৃশংস হামলার নিন্দা জানিয়ে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীকে শোকবার্তা পাঠাই। এই কাপুরুষোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে জনমত সৃষ্টি ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ২১ এপ্রিল শ্রীলঙ্কায় সিরিজ বোমা হামলায় নিহতদের স্মরণ করছি। এ হামলায় আমার ফুফাতো ভাই শেখ সেলিম এমপি-এর নাতি আট বছরের নিষ্পাপ শিশু জায়ান চৌধুরী নিহত হয়েছে।

তিনি বলেন, জায়ানের বাবা মশিউল হক চৌধুরী গুরুতর আহত অবস্থায় এখনও শ্রীলঙ্কায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিহতদের আত্মার মাগফিরাত এবং শান্তি কামনা করছি। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।

‘গত রোববার ব্রুনেই দারুস সালাম-এর রাজধানী বন্দর সেরি বাগওয়ানের বিমানবন্দরে নামার পরপরই আমি এই মর্মান্তিক হামলার খবর পাই। তার কিছুক্ষণ পর জায়ানের মৃত্যুর খবর আসে,’যোগ করেন শেখ হাসিনা।

বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে থাকবে কি না– এমন প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এদের সৃষ্টিটা কোথা থেকে সেটাও তো আপনাদের দেখতে হবে! এদের তৈরি হয়েছে কাদের দিয়ে, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে, হত্যা ক্যু, ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে। দেশের রাষ্ট্রপতি হত্যা করে যারা ক্ষমতা দখল করেছে তাদের দ্বারা যদি দল গঠন করা হয়। সেই দল থাকবে কি না, সেটাই বিষয়।

লম্বা সময় ক্ষমতার বাইরে থাকা সামরিক ছত্রচ্ছায়ায় জেনারেল জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া বিএনপির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতা দখলকারী অবৈধ দল, তারা ক্ষমতায় থাকতে পারলে টিকে থাকে। ক্ষমতার বাইরে থাকলে টিকে থাকতে পারে না। কারণ তাদের শিকড়ে জোর নাই। তাদের শিকড়ই নাই।

টানা তিনবারসহ চারবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, স্বর্ণলতা যখন কোনো একটা গাছের উপর পড়ে দেখতে কিন্তু খুব সুন্দর লাগে। কিন্তু স্বর্ণলতা কিন্তু গাছটাকে ধ্বংস করে দেয়। এই সমস্ত দল যখন তৈরি হয়েছে, তখন খুব চোখ ধাঁধানো সুন্দর, সোনালি স্বর্ণলতা দেখা গেছে, খুব ভালো। অনেকেই সেখানে ছুটে গেছে। এদের তো শিকড় নাই। কাজেই তাদের অবস্থা যদি নাজুক হয় এর দায়-দায়িত্ব কার? যারা সে দল চালাচ্ছে, নেতৃত্ব দিচ্ছে তাদের।

ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিতদের শপথ নিতে সরকারের চাপ নেই

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের (এমপি) যারা শপথ নিয়েছে তারা স্বেচ্ছায় গিয়ে শপথ নিয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যে জনপ্রতিনিধিরা শপথ নিয়েছে এখানে সরকারের কিন্তু কোনো চাপ নেই। আমরা চাপ দিতে যাবো কেন?

শেখ হাসিনা বলেন, তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত, তারা নিজেরাই বলছে, তাদের সংসদীয় আসনের জনগণই চায়। জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে তারাই চাপ দিচ্ছে, তারা বলছে। এজন্য তারা শপথ নিয়েছে। যারা শপথ নিয়েছে তারা বলছে যে, তারা সংসদে গিয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে কথা বলবে।

‘শপথ নিয়ে তারা সংসদে এসেছে, তারা তাদের কথা বলবে। এখানে আমাদের দোষ দেয়ার কী আছে। আর বিএনপি একটা রাজনৈতিক দল যেটাই তারা করুক সেটা তাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। একটা দল নিজেই তার সিদ্ধান্ত নেবে। এখানে অন্য কোনো দল তাদের ওপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারে না।’

খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির আবেদন হয়নি, মন্তব্যের কিছু নেই

খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্যারোলের জন্য কিন্তু আবেদন করতে হয়। সাধারণত প্যারোল তখনই পায় আবেদন করলে। কিন্তু এখানে কিন্তু কেউ আবেদন করেনি এখনও। যেহেতু আবেদন করেনি, সেহেতু এ ব্যাপারে কমেন্ট করার কিছু নেই, আমাদের বলার কিছু নেই।

শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়াকে কিন্তু আমরা রাজনৈতিকভাবে গ্রেফতার করিনি। খালেদা জিয়ার তার দুর্নীতির কারণে কোর্টের মাধ্যমে সাজাপ্রাপ্ত এবং সেই শাস্তি সে ভোগ করছে। আর সেই মামলাটাও কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার করেনি। মামলাটা করে গেছে তত্বাবধায়ক সরকার।

Print Friendly

Related Posts