মাদক দিয়ে ব্যবসায়ীকে ফাঁসালেন মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক!

ইফতেখার শাহীন, বরগুনা: বরগুনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ফরহাদ আকন এর বিরুদ্ধে আবারও ইয়াবা দিয়ে সার ব্যবসায়ী মো. বাচ্চুকে ফাঁসানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। বরগুনার ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ মিছিল এবং বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্যের হস্তক্ষেপে গভীর রাতে আটককৃত ওই ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে।

এর আগে ওই উপপরিচালক ২০১৮ সালের ১৭ জানুয়ারী বেতাগী উপজেলার বকুলতলী গ্রামের আলতাফ প্যাদার ছেলে সিদ্দিককে এক কেজি গাঁজা দিয়ে ফাঁসিয়ে ৮০০০ টাকা ঘুষ নিয়েছে ওই কর্মকর্তা। যুগান্তরে ১৮ জানুয়ারী নিউজ ছাপা হলে ঘুষ টাকা ফেরৎ দেয় ওই কর্মকর্তা।

জানা গেছে, শুক্রবার দুপুর দুইটার দিকে বরগুনা পৌরসভার মাদ্রাসা সড়কে মেসার্স মাওয়া বীজ বিতানের মালিক মো. বাচ্চু মিয়ার দোকানে মুড়ির সঙ্গে ৪২ পিচ ইয়াবা রেখে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ফরহাদ আকনের নেতৃত্বে ব্যবসায়ী বাচ্চুকে আটক করে। পরে  থানায় সোপর্দ করে চালান দেওয়া হয়।

মেসার্স মাওয়া বীজ ভান্ডার এর মালিক মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, শুক্রবার দুপুরের দিকে এক ব্যক্তি একটি মুড়ির পোটলা নিয়ে আমার দোকানে এসে এক কেজি সার ক্রয় করেন। মুড়ি এবং সার আমার দোকানের সামনে রেখে বলে আমার আরো কিছু মালামাল বাইরে রয়েছে সেগুলো নিয়ে আসতেছি। লোকটি যাওয়ার কিছুক্ষন পর ওই কর্মকর্তার নেতৃত্বে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের লোকজন এসে আমার দোকানে হাজির হয়ে তারা বলেন, আপনার দোকানে মাদক রয়েছে। আমি বলেছি আপনারা খুঁজে দেখেন। আমি তো একজন সার বিক্রেতা। ফরহাদ আকন বলেন, মুড়ির মধ্যে ইয়াবা রয়েছে। আপনি আমাদের সাথে চলেন। এ কথা বলেই আমাকে নিয়ে যায় তাদের অফিসে। অফিসের সামনে যাওয়ার পর সেই  মুড়িওয়ালাকে ফরহাদ আকনের সঙ্গে দেখতে পাই। তার কাছে জিজ্ঞাসা করতে বললে তারা আমার কথার কোন গুরুত্ব না দিয়ে উল্টো আমাকে গালমন্দ করেন।

এ ঘটনায় শুক্রবার বরগুনা শহরে তাৎক্ষনিক বিক্ষোভ মিছিল বের করে ব্যবসায়ীরা। রাতেই সকল দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়। সকল ব্যবসায়ীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাৎক্ষণিক ব্যবসায়ীরা বরগুনা শহরে মাইকিং করে শনিবার সকাল হতে সকল দোকানপাট বন্ধ রাখবে এবং প্রেস ক্লাবের সামনে এ ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচীর ঘোষনা করেন। শহরে উত্তেজনা বিরাজ করলে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বরগুনার পুলিশ সুপার ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের উর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। পরবর্তীতে পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর ব্যবসায়ী বাচ্চু মিয়াকে শুক্রবার রাত ১২ টার সময় থানা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ওই কর্মকর্তা চাপের মুখে মামলা প্রত্যাহার করে নেয়। ওই কর্মকর্তা বরগুনায় যোগদান করার পর এ জাতীয় নাটক করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবির মোহাম্মদ হোসেন বলেন, আমার প্রথমেই সন্দেহ হয়েছে। যার কারনে আমি মামলা গ্রহন করিনি। তারপরও ওই কর্মকর্তা মামলা প্রত্যাহার করেছে। বরগুনা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ওই উপপরিচালক ফরহাদ আকন বলেন, আমাদেরকে সোর্স ইনফর্ম করেছে সেই প্রেক্ষিতে ব্যবসায়ী মো.বাচ্চু মিয়াকে আটক করা হয়। এ ব্যাপারে আর কিছু বলতে চাই না।

Print Friendly

Related Posts