সৈয়দ রফিকুল আলম এর কবিতা

কড়চা

বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন সোনার বাংলা গড়তে নিপীড়িত জনগনকে নিয়ে, আমাদের বীর বাহিনী ময়দানী যুদ্ধে সৌকর্যময় শত্রু বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করে ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তলেখা জমিনে সঙ্গে দু’লাখ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে সঙ্গে মিত্র জোটের রক্তঝরা মানবিক বোধের ঐকান্তিক একাগ্রতায় আমরা মুক্ত হয়েছি, বঙ্গবন্ধু ফিরলেন, দেখলেন, রাজকোষ খালি, সর্বত্র ভাঙ্গা ঘর, অবিরাম প্রচেষ্টায় খোড়া পা নিয়ে একটু একটু করে দাঁড় করালেন। তন্মধ্যে যেমন ছিল দুধহীন লিকার চা ও চিনির বদলে গুড়, মন্ত্রী হতে চাপরাশি একই সূত্রে পান করতে হতো এ রকম উদাহারণ ভুড়ি ভুড়ি চেয়েছিলেন এই দুর্ঘট অবস্থায় রাজকোষের ব্যয় কমানো। কিন্তু আজ কি দেখতে পাই! নব্বই শতাংশ মানুষের দু বেলা পেট ভরে খাবার নাই, কি করে বা থাকবে? জ্বালানী থেকে শুরু করে সর্বত্র পণ্য দ্রব্যের আকাশছোঁয়া গতির তাণ্ডব, অর্থনীতির এই বিক্রিয়া কবে নাগাদ শোধন হবে? তৈল মর্দন হচ্ছে,হবে-না হয় কোন যাদু দণ্ডতে লক্ষ হাজার কোটি অর্থ বিদেশে পাচার হয়, কারা এই দণ্ডমুণ্ডে জড়িত খুঁজে বের করা রাষ্ট্রের কর্তব্য, তথা জনগণের টাকা উদ্ধার করে জনগনকে ফেরত দেয়া।” চার দশক পূর্বে মধ্যবিত্ত শব্দটি মিইয়ে গেছে, এখন শুধু উপরতলা ও গাছতলা, চারদশক পূর্বে ছিল আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের উঠা নামা আর এক ডলার সমতুল্য এখন সাত আট ডলার; আর আমাদের টাকার মুদ্রার পরিমাণ কতো…অঙ্ক কষে দেখতে হবে কি? রাষ্ট্রের মালিক জনগন; এক শতাংশ বা আরো কম তাদের জন্য কি এই রক্তঝরা দেশ? তা হলে কি নুন আনতে পান্তা পুরোয়-নিরানব্বই শতাংশ কি ক্ষয়ে ক্ষয়ে মরবে? এই নিঃকাব্য কারো গায়ে গতরে ঝাল ছিটানো নয়, কোন রাজনৈতিক অনুসন্ধিৎসু প্রেক্ষাপটে নয় এই পাথরের ন্যায় কঠোর কঠিন সত্য প্রকাশ।

 

স্বয়ং দীক্ষায় প্রতিবন্ধীরাও পারে

 

অনতি তরুন বয়সে, স্কুল ফাঁকি দিয়ে সিনেমা দেখার খুব শখ ছিল, বিশেষত হলিউডে নির্মিত ছবির প্রতি টান ছিলঃ “জেরি লুইস নামে এক প্রখ্যাত কমেডিয়ান একটি সিকোয়েন্সে প্রতিবন্ধীর ভূমিকায় একটি বিস্তীর্ণ খোলামাঠে কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও অস্বাভাবিক ভাবে দৌড়াচ্ছিলেন, কারন-তাঁর হাত পা মাথা ঘাড় ও চোখ এবং অঙ্গ প্রত্যঙ্গে ভূমির প্রতি সুরক্ষা-ভারসাম্যের যে প্রয়োজনীয়তা তাতে কিছুটা সময় পার হয়, তন্মধ্যে শরীর বাঁকানো অ্যাক্রোবেট, অভিনব কৌশলে-চমক, কিছুটা সময় সাপের ফণার মতো দোলাদোলে মাটিতে দোলে আবারো কসরতের মাধ্যমে ওঠে। এতে বেশ সময় ক্ষয় হয়, কিঞ্চিৎ অধৈর্য হয়ে শব্দগতে স্ব প্রকাশ করলাম “and stil…?” অন্য দর্শকরাও বলে উঠলো How’s that…।” ক্ষণিকে দীর্ঘ দৌড়ে মাটিতে লুটিয়ে থাকা একটি স্বর্ণখণ্ডের প্রতি ওর দৃষ্টি পড়ল, সমগ্র শরীরে ভারসাম্য স্বর্ণখন্ডটি হাতে ভরে ম্যাজিকেল সাম্যে দাঁড়িয়ে নাচতে লাগলো। জোড় হাতে হলভরা দর্শকের মুহুর্মুহু জোড়া তালি পড়ল, জেনেছি ব্যক্তিগত জীবনে তিনিও কিছুটা প্রতিবন্ধী ছিলেন।” পৃথিবী বিখ্যাত কমেডিয়ান হয়ে স্বীকৃতিও পেয়েছেন।” যেমন ছিলেন স্টিফেন হকিংস এর মতো প্রখ্যাত বিজ্ঞানী, যিনি ভূমণ্ডল গ্রহ এবং জাগতিক আয়ুষ্কালের গণনা নিজস্ব মতাদর্শে নির্দেশনা দিয়েছেন। আইনস্টাইনের মতো জগৎ বরণ্য বিজ্ঞানী যে সূত্রধারা সৃষ্টি করে গেছেন এই অক্ষে সর্বব্যাপী আদৃত থাকবে; তিনিও ছিলেন একজন প্রতিবন্ধী। সৃষ্ট এই বিশ্বময়ে কাকে কোন প্রতিভা গুণে সর্বংসহা তুল্যমুল্যে ভাগ বণ্টন করেছেন সর্বব্যাপী তিনিই একক জ্ঞাত।”কোন সৃষ্টিকে খাটো করে দেখতে নেই। কেননা আমরা সবাই স্রষ্টার সৃষ্টি।

Print Friendly

Related Posts