কেরানীগঞ্জের বেউতায় নির্মাণ হবে মুক্তিযোদ্ধা হসপিটাল

রিপন শান: মুক্তিযোদ্ধারা আজ বয়সের ভারে ন্যুব্জ, রোগে শোকে আক্রান্ত, সুচিকিৎসা সেবার কাছাকাছি অনেকে পৌছাতে পারছে না। বিভিন্ন হাসপাতালে অবহেলা অযত্নের কারণে মুক্তিযোদ্ধারা মানসিক অশান্তিতে রয়েছে। এই কষ্ট থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে, দীর্ঘদিন ধরে স্বপ্ন, পরিকল্পনা ও কার্যক্রম চলছে একটি মানসম্মত মুক্তিযোদ্ধা হসপিটাল প্রতিষ্ঠার।

তারই ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় বেশ কয়জন মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, উদ্যোক্তা ও শুভানুধ্যায়ীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ঢাকা থেকে সাত কিলোমিটার দূরে কেরানীগঞ্জ থানার তারানগর ইউনিয়নে বেউতা নামক এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা হসপিটালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন বীরমুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আব্দুল আহাদ চৌধুরী ।

গণমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন- এই হসপিটালটি “মুক্তিযোদ্ধা হসপিটাল” নামে নামকরণ করা হয়েছে এবং মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারবর্গ মালিকানায় থাকবে। মুক্তিযোদ্ধা,মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, মুক্তিযোদ্ধার নাতি নাতনী এবং উদ্যোক্তা হিসাবে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা শেয়ার হোল্ডার হতে পারবে। প্রতি শেয়ারের মূল্য এক লক্ষ টাকা । যিনি এক লক্ষ টাকা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ৪৫ দিনের মধ্যে পরিশোধ করবেন, তিনি এবং তার মনোনিত নমিনীকে আর একটি শেয়ারের মালিক কর‍তে পারবেন। অনেক মুক্তিযোদ্ধা এককালীন এক লক্ষ টাকা দিতে নাও পারতে পারে, তারা কিস্তিতে শেয়ার ক্রয় করতে পারবে। যেমন- কোন মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের সদস্য প্রথমে দশ হাজার টাকা জমা দিয়ে সদস্য ফরম গ্রহণ করতে হবে। বাকী নব্বই হাজার টাকা মাসিক পাচ হাজার টাকা করে সর্বোচ্চ ১৮ মাসে পরিশোধ করে একটি শেয়ারের মালিক হতে পারবেন।

তিনি আরো জানিয়েছেন, এই হসপিটালটি লিমিটেড কোম্পানি হবে, কোন ব্যাক্তি মালিকানা হবে না। প্রতি তিন বছর অন্তর-অন্তর এই লিমিটেড কোম্পানির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন হবে, যেখানে পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচিত করা হবে। প্রতি বছর এজিএম হবে এবং লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।

গণমাধ্যমকে অধ্যক্ষ চৌধুরী আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন- ছোট পরিসরে হলেও আগামী ১ জানুয়ারি ২০২০ তারিখ প্রায় দুই বিঘা জমির মধ্যে নির্মিত হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হবে ইনশাআল্লাহ। ভবিষ্যত কার্যক্রম পরিকল্পনার মধ্যে থাকছে- মেডিকেল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউট, মেডিকেল টেকনোলজি ইনস্টিটিউট, ফিজিওথেরাপি ইনস্টিটিউট, ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ও কলেজ, মুক্তিযোদ্ধা বিশ্ববিদ্যালয় এবং মুক্তিযোদ্ধা রিসোর্ট গড়ে তোলার প্রকল্প ।

মুক্তিযোদ্ধা হসপিটালে চিকিৎসা গ্রহণের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের সদস্যরা নগদ ব্যয়ের ক্ষেত্র ছাড়াও ৭৫% ছাড় পাবেন। অন্য রোগীরা নিয়ম অনুযায়ী বিল পরিশোধ করবে।

মুক্তিযোদ্ধা হসপিটালে যোগাযোগের অস্থায়ী ঠিকানা : বাড়ি #৬১, রাস্তা #৯/এ, ধানমন্ডি, ঢাকা-১২০৯ ।

Print Friendly

Related Posts