শোভন-রাব্বানীর বিদায়, ছাত্রলীগের নেতৃত্বে জয়-লেখক

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ অবশেষে ছাত্রলীগের সভাপতির পদ থেকে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে গোলাম রাব্বানীকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

শনিবার রাতে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

সভাপতি শোভনকে সরিয়ে এ পদে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়কে আর রাব্বানীকে সরিয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে।

বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এরআগে গত ৮ সেপ্টেম্বর রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ড ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের যৌথ সভায় ছাত্রলীগ সভাপতি শোভন ও সাধারণ সম্পাদক রাব্বানীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হয়।

এ সময় দু’জনের কর্মকাণ্ড নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই দুই নেতার বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট নিয়েও কথা বলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।

ওইদিন আগে থেকে গণভবনে অপেক্ষমাণ ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক সভা শেষে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের পরামর্শে তা থেকে বিরত থাকেন বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়।

ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে আগে থেকেই নানা সমালোচনা চলে আসছিল। বিতর্কিত ব্যক্তিদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা দেওয়া ও অনৈতিক আর্থিক লেনদেন, সম্মেলনের পরও একাধিক শাখায় কমিটি না দেওয়া, দুপুরের আগে ঘুম থেকে না ওঠা, গণমাধ্যমকর্মীদের এড়িয়ে চলা কিংবা ফোন না ধরা, সংগঠনের একাধিক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েও নির্ধারিত সময়ের অনেক পর উপস্থিত হওয়া অথবা অনুপস্থিত থাকা ইত্যাদি অভিযোগ নিয়ে সমালোচনামুখর ছিলেন খোদ সংগঠনের নেতাকর্মীরাই।

ছাত্রলীগ সভাপতির বিয়ের অভিযোগ প্রমাণ হওয়া ছাড়াও দুই নেতার বিরুদ্ধে সংগঠনের নেত্রীদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার অভিযোগ নিয়েও ক্ষুব্ধ ছিলেন অনেকে।

আওয়ামী লীগের ৮ সেপ্টেম্বরের যৌথ সভায় কয়েকজন নেতা এসব বিষয় তুলে ধরেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর এসেছে। একই সঙ্গে ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে চাঁদার জন্য চাপ দেওয়ার অভিযোগ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. ফারজানা ইসলাম।

ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতাদের ক্ষোভ প্রকাশের খবরে তোলপাড় চলছিল কয়েকদিন ধরে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিস্তর লেখালেখিও চলছিল।

বিতর্কিত নেতাদের সরাতে ও সংগঠনকে গতিশীল করতে ছাত্রলীগের আগাম সম্মেলনের দাবি তুলে ধরেন অনেকেই। কেউ কেউ সম্মেলন ছাড়াই শুধু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটিরই যোগ্য কাউকে দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান। শেষ পর্যন্ত সে রকম সিদ্ধান্তই এসেছে।

Print Friendly

Related Posts