দুমকি আওয়ামী লীগে বিভক্তি, সম্মেলন নিয়ে উত্তেজনা

দুমকি (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর দুমকিতে নৌকা মার্কার পক্ষেবিপক্ষে বিভক্ত হয়ে পড়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অধিকাংশ নেতৃবৃন্দ দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা মনোনীত প্রার্থী কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এ্যাড. হারুন-অর-রশীদ হাওলাদারের পক্ষে কাজ করলেও দুমকি উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি  শাহজাহান সিকদার দলীয় প্রধানের সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। বিভিন্ন প্রতিকূলতা ও আওয়ামীপন্থী নৌকা বিরোধীদের ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে দলীয় প্রার্থী হারুন-অর-রশীদ হাওলাদার নির্বাচনে বিজয়ী হলে কোণঠাসা হয়ে পড়েন বিদ্রোহীরা।

পরে গত ১২ জুলাই কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিদ্রোহী প্রার্থীদের স্বপদে না রাখার বিষয়ে নির্দেশনা আসলে ২০ জুলাই পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী  আবুল কালাম আজাদকে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়।

এদিকে গত ২৫ আগস্ট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্জ্ব কাজী আলমগীর হোসেন স্বারিত এক চিঠির মাধ্যমে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি পুনর্গঠনের নির্দেশনা পেয়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে কমিটি গঠন শুরু করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ও সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আকন সেলিম।

অপরদিকে নিজেকে এখনো উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দাবি করে নিজ অনুসারীদের নিয়ে গত ১২ অক্টোবর ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রস্তুতি সভা করেন আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শাহজাহান শিকদার। উপজেলা আওয়ামী লীগের ৬৭ সদস্যের মধ্যে মাত্র ৯ জন সদস্য নিয়ে প্রস্তুতি সভা করেন তিনি। স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, বিদ্রোহী প্রার্থী শাহজাহান সিকদারের নেতৃত্বে প্রস্তুতি সভায় উপস্থিত সকলেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা মার্কার বিরোধিতা করাসহ দলীয় প্রার্থী ও নৌকা মার্কার বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রপাগান্ডা ছড়ানোর সাথে যুক্ত ছিলেন।

দুমকি উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম তুহিন দাবি করেন,  বিদ্রোহী প্রার্থী শাহজাহান সিকদার নির্বাচনে হেরে ও দলীয় পদ হারিয়ে এখন নৌকা বিরোধী ও শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত অমান্যকারীদের নিয়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে পাল্টা কমিটি দেওয়ার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছেন। এদিকে দুই গ্রুপের কমিটি করা নিয়ে যে কোন মুহূর্তে সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

তাদের দাবি,  জেলা আওয়ামী লীগের উদাসীনতা ও কঠোর পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে যে কোন মুহূর্তে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

নিজেকে এখনো উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দাবি করা বিদ্রোহী প্রার্থী শাহজাহান সিকদার বলেন, আমি এখন পর্যন্ত দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার বিষয়ে কোনো চিঠি পাইনি। তাই আমি এখনও স্বপদে বহাল রয়েছি। তবে কেন্দ্র থেকে আমাকে শোকজ করা হয়েছে। আমি তার জবাব দিয়েছি। কমিটি গঠনের বিষয়ে তিনি বলেন জেলা আওয়ামী লীগের কোন কোন নেতা আমাকে কমিটি গঠন করতে বলেছেন। তাই নিজ দায়িত্ব বোধ থেকে আমি কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছি।

উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আকন সেলিম বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থী শাহজাহান সিকদারকে দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব থেকে সরিয়ে আবুল কালাম আজাদকে দায়িত্ব দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। তাই আমি ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জেলা আওয়ামী লীগের চিঠির প্রেক্ষিতে বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি গঠনের কাজ অব্যাহত রেখেছি।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলমগীর হোসেন বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থী শাহজাহান সিকদার যা করছেন সেটা সাংগঠনিকভাবে বৈধ নয়। তিনি আরও বলেন, তার কোনো অভিযোগ থাকলে তিনি কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
#

Print Friendly

Related Posts