প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান হাকিমপুরী জর্দ্দার স্বত্ত্বাধিকারী হাজী মো. কাউছ মিয়া (ভিডিও)

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের ঐতিহ্যবাহী জর্দ্দা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান হাকিমপুরী জর্দ্দার স্বত্বাধিকারী, বাংলাদেশের শীর্ষ করদাতা ও করবাহাদুর হাজী মো. কাউছ মিয়া তার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নকলের মিথ্যা অভিযোগ থেকে রক্ষার জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমি ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠানটির ট্রেড মার্ক রেজিস্ট্রেশন করি যার নম্বর-১৩০০৮। ১৯৮৮ সাল থেকে হাকীমপুরী জর্দ্দা বাজারজাত শুরু করি। হাকীমপুরী জর্দ্দা সেবনের কারণে কারো কোনো ক্ষতি হয়েছে এই মর্মে আমার বিরুদ্ধে দেশের কোথাও কোনো অভিযোগ উঠেনি। প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে আমি নিজেও হাকীমপুরী জর্দ্দা সেবন করি। উক্ত জর্দ্দা সেবনের ফলে আমার শরীরে কোনো জীবাণুু বা ক্যান্সারের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি, যা দেশি-বিদেশি চিকিৎসক দ্বারা প্রমাণিত। আমার ৮৯ বছর বয়স হওয়া সত্তে¡ও আমি নিজে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা উক্ত ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। ফলে এখানে নকল তো দূরের কথা কোনো কেমিক্যালের মিশ্রণ ঘটাতে দেই না। ১৯৫০ সাল থেকে আমি সুনামের সহিত বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছি। চাঁদপুর পুরান বাজারে আমার ৬টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল। পাশাপাশি আমি ১৮টি প্রতিষ্ঠানের সোল এজেন্ট ছিলাম। এছাড়াও আমার আরো বিভিন্ন ব্যবসা  প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আমি কখনো নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনো ব্যবসা করি নাই।

কাউছ মিয়া বলেন, সৎ ও সততার সাথে ব্যবসা করার স্বীকৃতিস্বরূপ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক সর্বমোট ১৪ বার সেরা করদাতা পুরস্কার পাই। এর মধ্যে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনে ৭ বার সর্বোচ্চ করদাতা এবং সারা বাংলাদেশে ৭ বার ১নং সর্বোচ্চ করদাতা পুরস্কার লাভ করি। ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ঢাকা জেলার কর বাহাদুর পরিবারের স্বীকৃতি লাভ করি। এ ছাড়াও স্বাধীনতার আগে ও পাকিস্তান অব সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট কর্তৃক ১নং করদাতা হিসেবে সার্টিফিকেট লাভ করি। ১৯৫৮ সাল থেকে নিয়মিত কর প্রদান করে আসছি।  অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো যে, ১৯৯১ সাল থেকে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী হাকীমপুরী জর্দ্দা নকল করে বাজারজাত করলে আমি তাদের বিরুদ্ধে ১২৫টি মামলা দায়ের করি। প্রায় ৪০-৪৫ জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়। তাছাড়া বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ (গ) ধারায় মোট আটটি মামলা ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন আছে। ২টি মামলার রায়ে আসামিদের সাজা হয়। বাকি ৬টি মামলার বিচার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। উক্ত ধারায় ১৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং মৃত্যুদন্ডের বিধান রয়েছে।

তিনি বলেন, আমি নিজেই নকলকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ও জনগণের সহযোগিতা কামনা করে বিভিন্ন প্রত্রিকায় প্রচারণা করা হয়। নকল ফ্যাক্টরির ঠিকানা দিতে পারলে নগদ ১ লক্ষ টাকা ও মালামাল হাতেনাতে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রচার করেছি। হাকিমপুরী জর্দ্দা তৈরি করতে কোনো কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় না, তবে পারফিউম ফুড গ্রেড ব্যবহার করা হয়, তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।

তাছাড়া ২০০৭ সালে বিএসটিআই কর্তৃক মানসম্পন্ন হাকীমপুরী  জর্দ্দা সনদ লাভ করে। আমার এই সফলতায় ঈর্ষান্বিত হয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য বাজারে নকল হাকীমপুরী জর্দ্দা বাজারজাত করছে।  নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ বাজার থেকে ঐ সকল  নকল হাকীমপুরী জর্দ্দা  সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ  পাওয়া  গেছে  বলে বিভিন্ন  সংবাদ মাধ্যমে প্রচার  করে।  এতে  আমার  তিলে তিলে গড়ে  উঠা  প্রকৃত  হাকীমপুরী জর্দ্দার মানসম্মান  ক্ষুন্ন হয়েছে  বলে আমি মনে করি। নিরাপদ  খাদ্য  কর্তৃপক্ষ যদি আমার হাকীমপুরী জর্দ্দা পরীক্ষা করে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ পান তাহলে আমার বিরুদ্ধে যে কোনো আইনগত  ব্যবস্থা  গ্রহণ  করলে আমি তা মেনে নিব।

বিভিন্ন  গণমাধ্যমে জানা যায় যে, দেশে প্রায় ৪ হাজার জর্দ্দা ফ্যাক্টরি রয়েছে, কিন্তু রাজস্ব প্রদান করে মাত্র ২৩-২৪টি প্রতিষ্ঠান। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো লেভেল, কৌটা, ডিজাইন ও ছবি নকল করে জর্দ্দা বাজারজাত করছে। প্রশাসন এদের গ্রেফতার করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আমাদের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। এতে বেকার হবে লক্ষ লক্ষ মানুষ। হাজী মো. কাউছ মিয়া বলেন, সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে।

এমতাবস্থায় প্রয়োজনীয় তদন্ত সাপেক্ষে আমার হাকিমপুরী জর্দ্দার সুনাম রক্ষা, আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তিসহ আমার ব্যক্তিগত জীবনের ঐতিহ্য রক্ষা এবং নকলকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।

ভিডিও লিংক:

https://drive.google.com/file/d/17ujP1Zq4aIbegJBodrK19lbQ8Dt3-6PF/view

Print Friendly

Related Posts