ঘূর্ণিঝড় বুলবুল, আতংকে উপকূলীয় এলাকার মানুষ

ইফতেখার শাহীন: ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুলের’ প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বরগুনায় বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে বৈরি আবহাওয়া বিরাজ করছে। আকাশ ভারি মেঘে আচ্ছন্ন হয়ে রাত থেকে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি অব্যহত রয়েছে।

এদিকে নভেম্বরের সিডরের ভয়াবহতার শিকার উপকূলীয় বরগুনা জেলার মানুষের মধ্যে ‘বুলবুলের’ খবরে আতংক বিরাজ করছে। তবে দুর্যোগ মোকাবেলায় সব ধরণের প্রস্ততি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ‘বুলবুল’ আরও শক্তিশালী হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। এ কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব ধরনের নৌ-যানকে নিরাপদ আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে বরগুনার নদ-নদীগুলোর পানি না বাড়লেও স্বাভাবিকের চেয়ে ক্রমশ উত্তাল হয়ে উঠতে শুরু করেছে।

উপকূলীয় ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মোস্তফা চৌধূরি জানিয়েছেন, মালিক সমিতির পক্ষ থেকে সাগর ও নদীতে মাছ ধরতে যাওয়া ট্রলারগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার বার্তা দেয়া হয়েছে। বাঁধের কাছাকাছি এলাকাগুলোর বাসিন্দারা ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতি থেকে বাঁচতে নিরাপদ আশ্রয়ের প্রস্ততি নিতে শুরু করেছে।

২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর বরগুনাসহ উপকূলীয় অঞ্চলগুলোর উপর সুপার সাইক্লোন সিডর আঘাত হেনেছিল।

বরগুনা সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম কবির জানান, সিডরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত নলটোনার সাধারণ মানুষ ঘূর্নিঝড় বুলবুলের খবর শুনে কিছুটা আতংকে রয়েছে। তবে তাদের সব ধরণের প্রস্ততির জন্য সহায়তা ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

ঘূর্নিঝড় প্রস্ততি কর্মসূচি বরগুনা সদর উপজেলার দলনেতা জাকির হোসেন মিরাজ বলেন,  ‘আমাদের পক্ষ থেকে সবধরনের প্রস্ততি নেয়া হয়েছে।  ইতোমধ্যে সবগুলো ইউনিটকে প্রস্ততি নিয়ে প্রচারণা ও সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সময়মত আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে সহায়তার জন্য বলা হয়েছে।’

জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সব ধরণের প্রস্ততি নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনসহ সবগুলো ইউনিটকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টি আরও শক্তিশালী হয়ে উত্তর উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে আসতে পারে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার। যা ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

Print Friendly

Related Posts