খুশির আনন্দাশ্রু যে কত সুখের

অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ

৯ই ডিসেম্বর ২০১৯ রাত ১০:৩৮ মিনিট। আমার জীবনের সবচাইতে আনন্দের মুহূর্ত, স্মরণীয় মুহূর্ত। আমাকে কেউ বিনা শর্তে নগদ একশ কোটি টাকা প্রদান করলে আমি যতটুকু খুশি হতাম, তার চাইতে অনেক অ-নে-ক বেশি আমি আনন্দিত, উচ্ছসিত, উল্লসিত ও উদ্বেলিত।

খুশির আনন্দাশ্রু যে কত সুখের, খুশির ও উল্লাসের হতে পারে তা সুখ ভোগকারী ছাড়া অন্য কেউ বলতে বা উপলব্ধি করতে পারবে না। আর এই সুখ বিশ্বের হাতে গোনা কয়েক জনাই ভোগ করেছে – যা আমি পেয়েছি আজ রাত ১০ঃ৩৮ মিনিটের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ।

আমার মনে হয় আমার মনের আবেগটা আর চেপে না রেখে প্রকাশ করে ফেলাই ভাল। আজ রাত ১০ঃ৩৮ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন থেকে আমার একমাত্র সন্তান মোঃ আব্দুল কাদের সাগর আমাকেই প্রথম ফোন করে জানালো, “আব্বু, আমি আজ এবং এক্ষুনি পি এইচডি ডিগ্রি লাভ করলাম, আজ থেকে তোমার সাগর ড. আব্দুল কাদের সাগর”।

খবরটা পাওয়ার পর আমার খুশির ঝর্ণাটা এতই বেশি ছিল যার প্রকাশ পেয়েছিল খুব জোরে। আমি আনন্দে চিৎকার করে কেঁদে ফেলে আল্লাহর কাছে কোটি কোটি শুকরিয়া আদায় করেছি। খুশিতে কেঁদেছি। সেই মুহূর্তে আমার আনন্দটা এতই তীব্র ছিল যে, সে সময় শত কোটি টাকা আমাকে দিলে সেটিও আমার কাছে অনেক তুচ্ছ মনে হতো।

এখানে না বল্লেই নয় যে, আমাদের পরিবারের মধ্যে সাগরই একমাত্র প্রথম বিশ্বের প্রথম গ্রেডের ইউনিভার্সিটি থেকে নির্ধারিত ছয় বছরের এক বছর পূর্বেই অর্থাৎ পাঁচ বছরেই পি এইচডি ডিগ্রি বা ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করলো। এটিরও ছোট্ট একটা কৃতিত্ব রয়েছে সাগরের। পি এইচডি-তে ভর্তির পূর্বে জিআরই পরীক্ষায় সাগর সেই ব্যাচে বিশ্বের মধ্যে এত বেশি নাম্বার পেয়েছিল যে, এমএস না করেই সাগর পি এইচডি পড়ার সুযোগ লাভ করেছিল। দ্বিতীয় বর্ষে সে পি এইচডি ও এমএস একই সাথে করেছে। একটু বলে রাখা ভাল যে, পি এইচডি পাঠ্যাবস্হায় সাগর তার বিষয়ে বিশ্বের একজন স্বীকৃত উজ্জ্বল তারকা।

sagar

পি এইচডি পাঠ্যারতাবস্হায় সাগর নাসা ও গুগলসহ বিশ্বের অনেকগুলো প্রথম উচ্চ মানের কোম্পানিতে চাকুরীর অফার পেয়েছে। সাগর এখনো আমাকে জানায়নি যে, ভবিষ্যতে সে কি করবে।

আসল কথাটাই তো এখনো বলাই হয় নাই। সাগর পি এইচডি ডিগ্রি লাভ করেছে, “বায়ো মেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং” এর উপর যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন স্টেটের রাজধানী মেডিসনে অবস্থিত “ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন” রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ইলেক্ট্রনিক মেশিনের সাহায্যে সহজেই স্বল্প মূল্যে ক্যান্সারের জীবাণু ডিটেক্ট করার পদ্ধতি – যা চিকিৎসা বিজ্ঞানে পৃথিবীতে আলোড়ন সৃস্টি করেছে।

বুয়েটের ইলেক্ট্রনিক্স এন্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ছাত্র আব্দুল কাদের সাগর ইলেক্ট্রনিক্স মেশিনের মাধ্যমে “নো এ্যান্সার” অর্থাৎ ক্যান্সার রোগ ডিটেক্টরের অগ্রযাত্রী বা উদ্ভাবক। আমি সত্যি একজন গর্বিত পিতা।

আপনারা সবাই দোয়া করবেন, সাগর যেন আল্লাহর সৃষ্টির সেরা মানব জাতির উন্নতি ও কল্যাণ করে বিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম বৃদ্ধি করতে পরে।
সাগরের ইউনিভার্সিটিতে খুব শিগগিরই অনুষ্ঠিতব্য সার্টিফিকেট গিভিং সেরিমনি বা কনভোকেশন অনুষ্ঠানে আমরা মিয়া-বিবি উপস্থিত থাববো – ইনশাআল্লাহ।

 

অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ : সভাপতি, জাতীয় সাংবাদিক সোসাইটি

(ফেসবুক থেকে)

Print Friendly

Related Posts