সরকারি রাস্তা কেটে জমি ভরাট, বাধা দেওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান লাঞ্ছিত

মো. রাসেল হোসেন, ধামরাই: ঢাকার ধামরাই উপজেলার সুয়াপুর ইউনিয়নের রৌহারট্রেক এলাকায় পাকা রাস্তার পাশ থেকে মাটি কেটে জমি ভরাট করায় বাধা দেওয়ায় লাঞ্ছিত হয়েছেন সুয়াপুর ইউপি চেয়ারম্যান।

সোমবার (১৮ মে) সকাল ১১টার সময় এই ঘটনাটি ঘটে। লাঞ্ছিত ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সোহরাব হোসেন এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এলাকাবাসি সূত্রে জানা যায়, সাবেক মেম্বার মোঃ তারু মিয়া চুক্তি নিয়ে রোববার সকালে ভেকু দিয়ে কার্পেটিং রাস্তার পশ্চিম পাশে থেকে মাটি কেটে মোঃ সোনামিয়ার জমি ভরাট করছিলেন। এই সময় এলাকার লোকজন মাটি কাটতে বাধা দিলে সে বাধা উপেক্ষা করে মাটি কাটতে থাকে। পরে এলাকার লোকজন মিলে ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ নুর ইসলামকে জানালে মেম্বার নিজে এসে বাধা দেয়। কিন্তু সাবেক মেম্বার তারু মিয়া মেম্বারের কথা কর্ণপাত না করে নিজের প্রভাব খাটিয়ে ভেকু দিয়ে মাটি কাটতে থাকে। পরে মেম্বার নুর ইসলাম বিষয়টি সুয়াপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সোহরাব হোসেনকে জানান। এরপর চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন নিজে সেই রাস্তা কাটার স্থানে গিয়ে তারু মিয়াকে মাটি কাটায় বাধা দেন। এতে তারু মিয়া ক্ষুব্ধ হয়ে চেয়ারম্যানকে লাঞ্ছিত করে। পরে এলাকার উত্তেজিত জনতা মিলে তারু মিয়াকে মারধর করে। এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান ইউএনও বরাবর একটি অভিযোগ দেন। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ সামিউল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জমির মালিক মোঃ সোনামিয়ার ছেলে লোকমানকে মোবাইল কোটের মাধ্যমে আটক করে নিয়ে আসেন।

এই ব্যাপারে জমির মালিক সোনা মিয়া বলেন, আমি রাস্তার পাশের জমি ভরাট করে বাড়ী করার জন্য মাটি ব্যবসায়ী মোঃ তারু মিয়ার সাথে চুক্তি করি। চুক্তি অনুযায়ী তারা মিয়া মাটি ভরাট করে। কিন্তু রাস্তার মাটি দিয়ে জমি ভরাট করার ব্যাপারে আমি জানতাম না। রাস্তার মাটি কেটে জমি ভরাট করলে তাহলে আমি তারু মিয়া টাকা দিব কেন?

এই বিষয়ে জানতে চাইলে মাটি ব্যবসায়ী তারু মিয়া রাস্তার মাটি কাটার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি সোনা মিয়ার জমি ভরাট করার জন্য চুক্তি করেছি। কিন্তু রাস্তার মাটি কেটে জমি ভরাট করিনি।

এই ব্যাপারে ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ নুর ইসলাম বলেন, আমি নিজে গিয়ে রাস্তার পাশে মাটিকাটা বাধা দেই। কিন্তু তারু মিয়া আমার বাধা উপেক্ষা করে মাটি কাটে। পরে আমি বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানালে চেয়ারম্যান নিজে ঘটনাস্থলে আসেন। সেই সময় তারুমিয়া চেয়ারম্যানকে অপমানজনক কথা বলেন। পরে এলাকার লোকজন সেটা থামিয়ে দেয়।

এই বিষয়ে সূয়াপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ সোহরাব হোসেন বলেন, আমি খবর পেয়ে মাটি কাটার স্থানে গিয়ে দেখি তারু মিয়া মেম্বারের কথা না শুনে নবনির্মিত রাস্তার পাশে থেকে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে জমি ভরাট করছে। তাকে বাধা দিলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার সাথে খারাপ আচরণ করে। এই মাটি কাটার কারণে বৃষ্টি হলে রাস্তা ভেঙে যাবে। তখন জনগণের চলাচল অসুবিধা হবে। সেই জন্য এলাকার লোকজন আমাকে বললে আমি বাধা দেই।

এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ সামিউল হক বলেন, রাস্তা কেটে জমি ভরাটের বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতা পেয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জমির মালিকের ছেলে মোঃ লোকমানকে ধরে নিয়ে আসি। পরে রাস্তা ভরাটের বিষয়ে একটি মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাকে বলা হয়েছে আজকে দিনের মধ্যে রাস্তা ভরাট করে দিতে হবে।

Print Friendly

Related Posts