মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় রোগী মৃত্যু!

জাহিদুল হক চন্দন, মানিকগঞ্জ: হাসপাতাল ট্রলিতে ছেলের নিথর মরদেহ নিয়ে বিলাপ করছেন মা শিখা বেগম। অভিশাপ দিচ্ছেন হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকদের। বিনা চিকিৎসায় একমাত্র ছেলে চঞ্চল হোসেনের (২০) মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ মায়ের।

বুধবার দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালের আমতলায় এ চিত্র দেখা যায় সরেজমিনে। মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার উচুটিয়া এলাকার মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে চঞ্চল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চঞ্চলের বোন সুমাইয়া আক্তার জানান, ঢাকার একটি প্রেসে চাকরী করেন তার ভাই চঞ্চল। বুধবার সকালে ঢাকা থেকে বাড়ি আসেন তিনি। বাড়িতে এসে তাড়াহুড়া করে ভাত ও গরুর মাংস খাওয়ার সময় এক টুকরো মাংস আটকে যায় গলায়।

এরপর তাকে নিয়ে মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসেন তারা। তবে হাসপাতালে নিয়ে আসার পরে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে তার পাশে আসেনি কোন চিকিৎসক। এর কিছুক্ষণ পর চঞ্চল মারা গেছে বলে তাদেরকে জানানো হয় জরুরী বিভাগ থেকে।

চঞ্চলের মা শিখা বেগম জানান, দুই মেয়ে আর ছেলে চঞ্চলকে নিয়ে তার সংসার। স্বামী মারা গেছে দীর্ঘদিন। পারিবারিক অভাবের কারণে ছেলেকে চাকরী দিয়েছেন ঢাকার একটি প্রেসে। গতকাল মুঠোফোনে ছেলে গরুর মাংস রান্না করতে বলেন তাকে।

পরে আজ সকালে ওই গরুর মাংস দিয়ে ভাত খাওয়ার সময় গলায় আটকে যায় তার। এরপর হাসপাতালে নিয়ে আসলে বিনা চিকিৎসায় তার ছেলের মৃত্যু হয়। তিনি এই ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত বিচারের দাবি জানান।

মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালের জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ মাহফুজ জানান, হাসপাতালে আনার আগেই গলায় মাংস আটকে মৃত্যু হয় চঞ্চলের। হাসপাতালের জরুরী বিভাগে আনার পর ইসিজি করে বিষয়টি নিশ্চিত করে তাদেরকে জানানো হয়।

এ বিষয়ে জানতে হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. আরশ্বাদ উল্লাহ’র মুঠোফোনে একাধিক কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। সরেজমিনে তার কার্যালয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করার পরেও তিনি উপস্থিত না থাকার কারণে তার সাক্ষাত পাওয়া যায়নি।

Print Friendly

Related Posts