নিরাপদ রোড, নিরাপদ ড্রাইভিং

শফিউল আলম

 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,

আপনাকে শ্রদ্ধাভরে মায়ের মমতায় স্মরণ করি, সাংবাদিক সম্মেলনে প্রশ্নোত্তর পর্বে আপনার গণপরিবহন শ্রমিকদের সচেতনতামূলক বিষয় তুলে ধরার জন্য।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ কন্যা, সফল নেত্রী আপনাকে হাজার সালাম।

একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স কত মূল্যবান সেটা অনেক চালকই মনে করে না। কারণ- আমাদের দেশে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া যেমন সহজ, গাড়ি পরিচালনা করা আরও সহজ। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে তাকে অনেক বিষয়ে ইন্টারভিউ দিতে হয় এবং নিয়ম জানতে হয়। কয়েক ধাপ পাশ হওয়ার পরে তাকে লাইসেন্স দেয়া হয়।

যেখানে অনিয়ম, সেখানে সব কিছুই সহজ। আমরা নিয়ম না মেনে সহজভাবে চলার চেষ্টা করি।একজন গণপরিবহন চালকের যে কত বড় দায়িত্ব, অনেকেই তা মনে করিনা। তার একটু ভুলে- অনেক মানুষের একসাথে ক্ষতি হতে পারে। এমনকি জীবনও চলে যেতে পারে।

আমি এটা বিশ্বাস করি, বিআরটিএ স্বচ্ছ হলে অদক্ষ ড্রাইভার তৈরী হবেনা। অনেক লেখালেখির পরে যদিও এখন কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। যেখানে পরিচালনা ভালো সেখানে কাজ ভালো হবেই।

ড্রাইভিং একটি দায়িত্ববান কাজ যেখানে সমাজের সব শ্রেণীর মানুষ পরিবাহিত হয়, যারা গাড়িতে যাতায়াত করেন তারা যদি একটু চালকদের সহযোগিতা করেন তবে তিনি নিজেও নিরাপদ। যাত্রীর তাড়ার জন্য, অশোভন আচরণের জন্য, অনেক সময় চালক তার মনোবল হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু এটা অনেকেই বুঝতে চান না।

অনেক শিক্ষিত চালক আছে, দেখা যায় তারা দায়িত্ব নিয়ে গাড়ি পরিচালনা করেন। শিক্ষার হার গণ পরিবহনে কম থাকায় অদক্ষতার পরিচয় পাওয়া যায়।অদক্ষতা, অনিয়ম ও পরিচালনায় ত্রুটি- অনেক সময় দুর্ঘটনার কারণ হয়। নিরাপদ সড়ক যেমন চালকদেরও দাবি, তাদেরকে সহযোগিতা করার জন্য যাত্রীদেরও এগিয়ে আসতে হবে।

শ্রমিকরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শোষিত, তবে গণপরিবহনের চালক যদি তার কষ্টের অর্জিত রোজগার সঠিকভাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করে, তাহলে সমস্যা কম হওয়ার কথা। কষ্টে অর্জিত রোজগার যথাসম্ভব মূল্যায়ন করার চেষ্টা করতে হবে। আমি নিজে গণপরিবহন পরিচালনা করে সফলতা পেয়েছি। ব্রিটেনের লন্ডনের মেয়র পাকিস্তানী বংশোদ্ভুত পরিবহন চালকের সন্তান হতে পারলে, এদেশের পরিবহন চালকের সন্তানও সম্মানিত কেউ হতেই পারে। পৃথিবীতে যত বিখ্যাত ব্যক্তি তারা শ্রম দিয়ে বিখ্যাত হয়েছেন, সফল হয়েছেন। মনে রাখতে হবে- চিন্তা, শ্রম, সঠিক ব্যয়, পরিবারে সময় দেয়া, সময়কে মূল্যায়ন করা- এসব সাফল্যেরই চাবিকাঠি।

মাননীয় সরকার প্রধানের কাছে আমার আবেদন- এই পরিবহন চালকদের দিনরাত পরিশ্রম করতে হয়, বিনিময়ে তারা ঠিক মতো নিয়োগপত্র ও পারিশ্রমিক পায় না। তাদের দরকার সঠিক নিয়ন্ত্রণ। তাদেরকে অসহায়ত্ব থেকে রেহাই দেওয়া দরকার। সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পরিবহন নেতারা আছেন। এসব নেতাদের নির্দেশক্রমে পরিবহন শ্রমিকদের সঠিক নির্দেশনাতে আনা হোক। যাতে এই পরিবহন শ্রমিকরা আর অবহেলিত না হয়।

শফিউল আলম : যুগ্ন সম্পাদক- জেলা বাস, কোচ, মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন এলেঙ্গা আঞ্চলিক শাখা, টাঙ্গাইল।

Print Friendly

Related Posts