জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা অব্যাহত

আমিনুল ইসলাম:  সারা দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমনের ফলে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বেড়েই যাচ্ছে এবং নানা ধরনের রোগ ব্যাধীতে আক্রান্ত মানুষ স্বাভাবিক চিকিৎসা সেবা পেতে যখন দিশেহারা ঠিক এই কঠিন পরিস্থিতিতে জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের সকল নিয়মিত চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রেখেছে।

সরজমিনে দেখতে গেলে, দেখা যায় হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন অসংখ্য রোগী দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে আসছেন এবং হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগন নিয়মিত বহির্বিভাগে রোগী দেখছেন। বহির্বিভাগ ছাড়াও সকল অন্তঃবিভাগ/ ওয়ার্ড, ডায়ালাইসিস, ইসিজি, ইকো, ইটিটি, সিসিইউ, এইচডিইউ, আইসিইউ,প্রি মেচিওর তথা অপরিপক্ষ বয়সে জন্ম নেয়া বাচ্চাদের বিশেষ যত্নের এর জন্য এনআইসিইউ, সকল ধরনের অপারেশন, নরমাল ডেলিভারি, ফিজিওথেরাপি কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

পাশাপাশি যে সকল বিভাগে ২৪/৭ সার্ভিস অব্যাহত রয়েছে তা হলো হাসপাতালের জরুরী বিভাগ, প্যাথলজি বিভাগ, এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রাফি,সিটিস্ক্যান, ব্লাড ব্যাংক এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এ্যাম্বুলেন্স ।

এর ফলে বর্তমান এই কঠিন সময়ে দেশের নানা প্রান্তে নিয়মিত চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হওয়ার কথা উঠলেও জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ব্যতিক্রম এবং সাধারন মানুষের আস্থা আর বিশ্বাস নিয়ে নিয়মিত তাদের সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে । হাসপাতালে আসা রোগীদের করোনা সংক্রমন মুক্ত রাখতে বছরের শুরু থেকেই নানা ধরনের প্রস্তুতি গ্রহন করে রেখেছে হাসপাতাল প্রশাসন।

করোনা মোকাবেলায় প্রস্তুতির অংশ হিসেবে হাসপাতাল প্রশাসন, ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্যদের সমন্বয়ে ২৭ সদস্য বিশিষ্ট র‌্যাপিড রেসপন্স টিম গঠন সহ হাসপাতালের প্রবেশ পথে জীবাণুমুক্ত ফগিং শাওয়ার টানেল, ফুটবাথ , প্রবেশ পথ সহ হাসপাতালেরর নানা স্থানে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করেছে । হাসপাতালের অভ্যন্তরে সকলের মাস্ক পরিধান বাধ্যতামুলক ছাড়াও হাসপাতালে প্রবেশ পথে সকলের শরীরের তাপমাত্রা মেপে হাসপাতালে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ।

হাসপাতালের বর্হিবিভাগের টিকেট কাউন্টারের সামনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে গোল বৃত্ত এঁকে দেওয়া হয়েছে, ডাক্তারদের চেম্বারের সামনে প্রত্যকটি বেঞ্চের মাঝে সামাজিক দূরত্ব রাখা হয়েছে। এতে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক সুপারিশকৃত সামাজিক দ‚রত্ব বজায় থাকছে। একইসঙ্গে হাসপাতালে আগত সবাই যেন এসব বিষয় মেনে চলেন সে জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিরলস পরিশ্রম এর পাশাপাশি নানা ধরনের সচেতনতামূলক পোস্টার এর প্রচারনা চালাচ্ছেন ।

সর্দি, কাশি, জ্বর, গলাব্যাথা, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসা রোগীদের আলাদা ভাবে স্ক্রিনিং ও চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে ফ্লু কর্ণার। এছাড়াও জরুরি স্বাস্থ্য সমস্যায় সেবা নিশ্চিত করতে হটলাইনের মাধ্যমে ২৪ ঘন্টা টেলিমেডিসিন সার্ভিস খোলা রাখা হয়েছে।

বর্তমানের এই সার্বিক অবস্থা সম্পকের্ জানতে চাইলে হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক বাহার উদ্দীন ভূঁইয়া বলেন, “সার্বিক ঝুঁকি মোকাবিলায় একাধিক সতর্কতা গ্রহণ করে আমরা সবোর্চ্চ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি সকলকে যথাযথ চিকিৎসা সেবা দিতে । আমাদের হাসপাতালের বর্হিবিভাগ খোলা রাখা হয়েছে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগন প্রতিদিন নিয়মিত বর্হিবিভাগে রোগী দেখছেন,নিয়মিত ভাবে অসংখ্য রোগীরা তাদের চিকিৎসা নিয়ে যাচ্ছেন । আমরা শুরু থেকেই সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে আমাদের চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রাখায় বর্তমানের দেশের দুরবর্তী জায়গা থেকেও এসে আমাদের এখানে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।’

তিনি আগত প্রত্যেক ব্যক্তিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত নির্দেশনা মেনে চলতে অনুরোধ করেন।

এছাড়াও সম্ভাব্য যে কোনো জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় হাসপাতালকে সংক্রমণ মুক্ত রেখে সবোর্চ্চ প্রস্তুতি রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক বাহার উদ্দিন ভূঁইয়া।

Print Friendly

Related Posts