মুহূর্তেই ভাইরাল ওপার বাংলার কবি সিদ্ধার্থ সিংহের ‘প্লিজ’

শমীক ভট্টাচার্য : ‘প্লিজ’ নামে একটি কবিতা এই মুহূর্তে ইন্টারনেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে ঘুরছে। সিদ্ধার্থ সিংহের লেখা এই কবিতাটি ‘শিল্প সাহিত্য’ পত্রিকায় গতকাল ২৬ শে জ্যৈষ্ঠ ১৪২৭, ৯ জুন ২০০২০-তে প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে লাইক এবং কমেন্টের ধুম পড়ে যায়।
বিশিষ্ট সাংবাদিক সুমন ভট্টাচার্য শেয়ার করে লেখেন—
আমার পুরনো সহকর্মী Siddhartha Singhaদার একটা কবিতা। আজই একটি ওয়েব ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হযেছিল।
শাসকের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে একজন কবির তোলা কিছু জরুরি প্রশ্ন।
রাজনীতি, দলবদল আরো অনেক কিছু দেখতে দেখতে এইরকম একটা কবিতা শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারলাম না। লিখেই তিনি কবিতাটি শেয়ার করেছেন।
আর সুমন ভট্টাচার্যের সেই শেয়ার থেকেই আবার করেছে কলকাতা স্বপ্নরাগ পরিবার। আর তার সঙ্গে সঙ্গেই অন্যান্যদেরও শেয়ার করার হিড়িক পড়ে যায়। বিভিন্ন বিশিষ্টজনের ব্যক্তিগত ওয়াল ছাড়াও চোখে পড়ে— ভারত বাংলাসাহিত্য বাকপ পরিবার ও বাংলাদেশ কবি পরিষদ চট্টগ্রাম বিভাগীয় শাখা, রাইটার্স ইউনিয়ন অফ বাংলাদেশ, আন্তর্জাতিক কবি পরিষদ, কবি ও কবিতার ভুবন, ভাবনা প্রকাশ সাহিত্য ম্যাগাজিন, কথাসাহিত্য, সাহিত্য প্রেমী, স্বাধীন বাংলা সাহিত্য পরিষদ, সাহিত্য রস লেখক ফোরাম, বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিক পরিবার (বাসাসপপ), দুই বাংলার মিতালী, শিল্পনীড় সাংস্কৃতিক খবরের কাগজ, বিশ্ববাঙালি সংস্থা, আধুনিক বাংলা কবিতা-র মতো বেশ কিছু আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিভিন্ন সাহিত্য সংগঠনের ফেসবুক ওয়ালে। কবিতাটি পোস্ট করার এক ঘণ্টার মধ্যেই শুধুমাত্র কবি সিদ্ধার্থ সিংহের ওয়াল থেকেই শেয়ার হয়ে যায় চুয়াল্লিশটি।
কী এমন লেখা আছে কবিতাটিতে? যখন শুধু বাংলা ভাষাই নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষার কবিতা থেকে পাঠকেরা মুখ ঘুরিয়ে দিচ্ছেন, তখন ‘প্লিজ’ কবিতাটি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে এই ভাবে ভাইরাল হল কেন? কেন এই কবিতাটিকে বিভিন্ন মুদ্রিত পত্রিকা ফের পুনর্মুদ্রণ করতে চাইছে? এর মধ্যেই অন্তত সতেরো জন বাচিকশিল্পী এই কবিতাটি ইউ টিউবে আবৃত্তি করার জন্য অনুমতি চেয়ে কেন যোগাযোগ করেছেন এই কবির সঙ্গে?
এই ‘কেন’র উত্তর পাওয়া যাবে শুধুমাত্র ‘প্লিজ’ কবিতাটিতেই। তাই কবিতাটি এখানে দিয়ে দেওয়া হল—
প্লিজ
সিদ্ধার্থ সিংহ
আমাকে একটু পরামর্শ দিন।
সবাই যেমন একদম নিচুতলা থেকে ওপরতলা অবধি
সেভেন্টি-সেভেন্টি টু পার্সেন্ট নজরানা দেন
আমি তার থেকে কিঞ্চিৎ বেশিই‌ দেব।
বললে, ছেলেদের দিয়ে এলাকা দখল করিয়ে দেব
যাদের মুখ আর দেখতে চান না
তালিকা দিলেই, হাসতে হাসতে নামিয়ে দেব তাদের মাথা,
যে সব মিডিয়া আপনার ভজনা করবে না
চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই বন্ধ করে দেব তাদের মুখ।
যা বলবেন এবং যা বলবেন না
আমি সেটাও করে দেব,
আপনি শুধু আমাকে একটু পরামর্শ দিন—
কী করলে এই শাসক দলের বড় মন্ত্রী বা নেতা না হই
অন্তত একজন কাউন্সিলর যাতে হতে পারি।
আর, একজন কাউন্সিলর হলে?
সব দিয়ে-থুয়ে, ফেলিয়ে ছড়িয়ে
চার-ছ’টা মেয়েছেলে পুষেও
বছর শেষে কমপক্ষে পাঁচ কোটি টাকা তো ঘরে তুলতে পারব।
আপনি শুধু আমাকে একটু পরামর্শ দিন
একটু পরামর্শ, প্লিজ।
Print Friendly

Related Posts