কলারটিউনে কন্ঠ দিয়ে বাজিমাত

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ ভারতজুড়ে গত কয়েক মাস ধরে ফোন করলেই সবার কানে ভাসছে কোভিড কলারটিউন। তিরিশ সেকেন্ডের সেই বার্তায় রয়েছে করোনাভাইরাস থেকে কী ভাবে সাবধানতা নিতে হবে। সুরক্ষিত থাকতে হবে।

তিনি ভারতেরই ভয়েস আর্টিস্ট জ্যাসলিন ভল্লা। তিনি-ই ভয়েস ওভার দিয়েছেন। নিজেও কলার টিউনে শুনছেন নিজের কণ্ঠ।

দেশ জুড়ে তখন সবে শুরু হয়েছে লকডাউন। স্টুডিয়োর প্রোডিউসারের কাছ থেকে ফোন এল জ্যাসলিনের কাছে। বলা হল, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক থেকে এই কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে সঠিক রাখতে হবে স্বরক্ষেপণ। গাম্ভীর্য থাকবে। আবার সেইসঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সাহায্যের আভাসও থাকবে।

সেইসঙ্গে এও বলা হল, কাজ শেষ করতে হবে দ্রুত। সব দিক মাথায় রেখে ঘরে বসেই রেকর্ড করলেন জ্যাসলিন। হিন্দি ও ইংরিজি, দু’টি ভাষায় তিনি রেকর্ড করেন। তখন ভেবেছিলেন, হয়তো দিন দশেকের জন্য তাঁর কণ্ঠ কলারটিউন হয়ে বাজবে।

কিন্তু তিনি ভুল প্রমাণিত হলেন। জ্যাসলিনের কণ্ঠ বেজেই চলল অতিমারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সাবধানবাণী শুনিয়ে। ফোন করে তিরিশ সেকেন্ড ধরে স্বকণ্ঠে সাবধানবাণী শুনে জ্যাসলিনের প্রথমে বেশ অস্বস্তি হত। মনে হত, কেমন যেন অশরীরী অভিজ্ঞতা। তার পর অবশ্য অভ্যাস হয়ে যায়।

অনেকের কাছে ‘বিরক্তিকর’ মনে হলেও কোভিড কলারটিউনের উপযোগিতা অস্বীকার করা যায় না। এই সাবধানবাণী জনপ্রিয় হয়েছে বলেই সোশ্যাল মিডিয়া ছেয়ে গিয়েছে একে ঘিরে তৈরি মিমে।

বাচিকশিল্পী হওয়ার আগে জ্যাসলিন ছিলেন ক্রীড়া সাংবাদিক। ১০ বছর তিনি কাজ করছেন ভয়েস ওভার আর্টিস্ট হিসেবে। বহু বিজ্ঞাপনে শোনা গিয়েছে তাঁর কণ্ঠ।

অবসরে গান আর কবিতা লিখতে ভালবাসেন জ্যাসলিন। সব হয়তো বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করা হয় না। কিন্তু তিনি লিখে চলেন মনের খেয়ালে।

জ্যাসলিন জানিয়েছেন, এই কলার টিউনের সুবাদে যা জনপ্রিয়তা পেয়েছেন, তা এর আগে কোনও দিন পাননি। অসংখ্য চেনা অচেনা মানুষ তাঁকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।

পাশাপাশি তিনি এও জানিয়েছেন করোনা আবহে ক্ষতিগ্রস্ত ভয়েস ওভার ইন্ডাস্ট্রিও। প্রথম দিকে বাকিদের মতো এখানেও শিল্পীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তবে ধীরে ধীরে সবাই আতঙ্ক কাটিয়ে ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছেন। বলছেন জ্যাসলিন।

Print Friendly

Related Posts