করোনায় বিচারকের মৃত্যু

রিপন শান: কোভিড নাইনটিনে আক্রান্ত হয়ে এবার প্রাণ হারিয়েছেন দেশের প্রথম কোনো বিচারক । ২৪ জুন বুধবার মারা যাওয়া এই বিচারকের নাম ফেরদৌস আহমেদ। লালমনিরহাটের এই জেলা জজ জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ছিলেন। এর আগে তিনি ভোলা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন ।

ফৌরদৌস আহমেদের মৃত্যুর খবর জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও হাই কোর্ট বিভাগের বিশেষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান সাংবাদিকদের বলেছেন, করোনাভাইরাসে এটাই প্রথম কোনো বিচারকের মৃত্যু। ফেরদৌস আহমেদ ঢাকার সিএমএইচে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাতে মারা যান। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর তাকে প্লাজমাও দেওয়া হচ্ছিলো। নিয়তির নিষ্ঠুর খেলায় তাঁকে পাড়ি দিতে হলো না ফেরার দেশে ।

আইন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জামালপুরে শহরে জানাজার পর পারিবারিকভাবে সেখানেই দাফন করা হবে বিচারক ফেরদৌসকে। বিচারক ফেরদৌস আহমেদ এর মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

প্রধান বিচারপতি এক শোক বার্তায় বলেন, “ফেরদৌস আহমেদ ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে আদালতে বিচারকাজ পরিচালনা এবং দায়িত্ব পালনের সময় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তিনি করোনাভাইরাস সৃষ্ট মহামারীর সময়েও জনগণের সাংবিধানিক অধিকার এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নিরন্তর কাজ করে গেছেন। মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ফেরদৌস আহমেদ একজন অকুতোভয় সৈনিক ।”

১৯৮৪ সালে বিচার বিভাগে মুন্সেফ (সহকারী জজ) হিসেবে যোগদান করেন ফেরদৌস আহমেদ। এরপর দীর্ঘ ৩৬ বছর নিষ্ঠার সাথে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বলে বলা হয়েছে শোকবার্তায়।  এদিকে বিশ্বস্ত সুত্র জানিয়েছে, ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বিচারকাজ পরিচালনা ও দায়িত্ব পালনের মধ্যেও সারা দেশে মঙ্গলবার নাগাদ নিম্ন আদালতের ২৬ জন বিচারক কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া সর্বোচ্চ আদালতের ২৬ এবং নিম্ন আদালতের ৭১ জনসহ মোট ৯৭ জন আদালত কর্মচারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা যায় ।

Print Friendly

Related Posts