রোগের নাম ‘অ্যালোপেসিয়া’

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ মাথার চুল উঠে যাওয়াও রোগ। রোগটির নাম ‘অ্যালোপেসিয়া’।

কখনো দেখা যায় মাথার তালুর একটা বিশেষ অংশ থেকে চুল উঠে যাচ্ছে, আবার কখনো মাথার পেছন থেকে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে চিন্তিত হয়ে পড়েন তাদের অভিভাবকেরা।

কিন্তু যদি হঠাৎ করে মাথার যেখান সেখান থেকে গোলাকারভাবে চুল উঠতে শুরু করে তখন কিন্তু বিষয়টি নিয়ে ভেবে দেখা প্রয়োজন।

চিকিৎসকদের মতে, এই জাতীয় সমস্যার জন্য দায়ী শরীরের অটোইমিউন ডিজিজ (Autoimmune Disease)। ডাক্তারি ভাষায় এই জাতীয় রোগকে বলা হয় ‘অ্যালোপেসিয়া’ (Alopecia)।

কোন কোন ক্ষেত্রে এই সমস্যা দেখা যায়? শুধু মাথার চুল নয়, শরীরের বিভিন্ন অংশের যেমন – ভ্রু ও দাড়ির চুলের ক্ষেত্রেও এই সমস্যা দেখা দেয়। পাশাপাশি নখ উঠে যাওয়ার প্রবণতাও দেখা দেয়।

প্রকারভেদ বিভিন্ন ধরনের ‘অ্যালোপেসিয়া’ দেখা যায়, প্রতিটি ধরনের আলাদা আলাদা উপসর্গ বা লক্ষণ হয়-

১) অ্যালোপেসিয়া এরিয়াটা (Alopecia Areata),

২) অ্যালোপেসিয়া ইউনিভার্সালিস (Alopecia Universalis),

৩) ডিফিউজ অ্যালোপেসিয়া এরিয়াটা (Diffuse Alopecia Areata),

৪) ওফিয়াসিস অ্যালোপেসিয়া (Ophiasis Alopecia),

৫) অ্যালোপেসিয়া টোটালিস (Alopecia Totalis)।

রোগের লক্ষণ

১) গোলাকার আকৃতিতে চুল উঠে যাওয়া। এক্ষেত্রে ঘুম থেকে উঠে দেখবেন বালিশের উপরে চুল পড়ে থাকতে।
২) চোখের পাতা, ভ্রু ও দাড়ি থেকে হঠাৎ চুল উঠে যাওয়া।
৩) অ্যালোপেসিয়া টোটালিসের ক্ষেত্রে স্কাল্পের সম্পূর্ণ চুল উঠে যেতে পারে।
৪) অ্যালোপেসিয়া ইউনিভার্সালিসের ক্ষেত্রে সারা শরীরের চুল উঠে যায়।
৫) অ্যালোপেসিয়া কখনো কখনো নখকেও নিষ্প্রাণ ও রুক্ষ করে তোলে। ফলে নখ ভেঙেও যায়। এটি আবার এই রোগের প্রথম উপসর্গ হতে পারে।

কাদের মধ্যে প্রবণতা বেশি দেখা দেয়? অ্যালোপেসিয়া সমস্ত বয়সের মানুষের হতে পারে, পাশাপাশি বাচ্চাদের মধ্যেও এই প্রবণতা দেখা যায়। মা-বাবার অ্যালোপেসিয়া থাকলে সন্তানেরও হতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যারা থাইরয়েড বা ডায়াবেটিসের মতো রোগে ভুগছেন, তাদের এই জাতীয় সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। তবে মনে রাখবেন, এটি কিন্তু কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। এটি জিনগত (১০-২০ শতাংশ ক্ষেত্রে) এবং অটোইমিউন রোগ হিসেবে চিহ্নিত।

রোগ নির্ণয় রোগের লক্ষণ দেখে এই রোগটি ত্বক বিশেষজ্ঞরাই নির্ণয় করেন। এছাড়া রক্ত পরীক্ষা, ভালোভাবে চুল পরীক্ষা করা এবং অ্যালোপেসিয়া নিশ্চিত করার জন্য ত্বকের বায়োপসিও করা হয়। চিকিৎসা সময় নিলেও প্রাথমিক কিছু চিকিৎসা করলে এই রোগ নির্মূল করা সম্ভব। বিভিন্ন ওষুধ, ইনজেকশন এবং আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মিকে কাজে লাগিয়ে এই রোগের চিকিৎসা করা হয়। এক্ষেত্রে, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।

সূত্র : বোল্ডস্কাই

Print Friendly

Related Posts