ভোলার নিন্মাঞ্চল প্লাবিত

রিপন শান: হঠাৎ করেই পানিবাহিত দুর্ভোগে পড়েছে দ্বীপজেলা ভোলার নদীতীরবর্তী নিন্মাঞ্চলের মানুষ । উজান থেমে নেমে আসা পানির প্রবাহ ও পূর্নিমার জোয়ারের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা ভোলার নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এতে পানিতে তলিয়ে গেছে নিচু এলাকা। পানি বন্দি হয়ে পড়েছে বাঁধের বাইরের অন্তত ৩০ হাজার মানুষ। ভোলা সদর উপজেলার রামদাসপুর সহ অন্তত দশটি চরের এক হাজারের বেশি পরিবার দুর্ভোগ কবলিত।

এদিকে ইলিশা, রাজাপুর ও ধনিয়া ইউনিয়নের বেশ কিছু পয়েন্ট দিয়ে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে শহর রক্ষা বাঁধ। এতে আতংকিত হয়ে পড়েছ নদীর তীরবর্তি মানুষ। বসতঘর ও ফসলি জমি তলিয়ে যাওয়ার শংকার মধ্যে তারা। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, ঝুঁকিপূর্ন এলাকায় দ্রুত তাৎক্ষতিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, উজান থেকে নেমে আসা আকস্মিক জোয়ার আর পূর্ণিমার প্রভাবে গত দুই দিন ধরে ভোলায় মেঘনার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে সদরের ইলিশা, তুলাতলী ও নাছির মাঝি পয়েন্টের বাঁধ। এছাড়াও পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বাধের নিচু এলাকা। ভাঙ্গন আতংকে নির্ঘুম রাতত কাটাচ্ছেন বাঁধ সংলগ্ন এলাকার মানুষ। নদীর তীরবর্তি এলাকার মানুষ ভাঙ্গন আতংকে রয়েছেন‌। দ্রুত বাধ মেরামতের দাবী জানিয়েছেন তারা।

সুত্র জানিয়েছে- সদরের রাজাপুর, নাছির মাঝি, তুলাতলী, বোরহানউদ্দিনের হাকিমুদ্দিন, মির্জাকালু, তজুমদ্দিনের চর জদিরউদ্দিন, সোনাপুর, চর মোজাম্মেল, মনপুরার কলাতরীর চর, চরফ্যাশনের ঢালচর, কুকরী-মুকরী, চরপাতিলা, লালমোহনের চর কচুয়াখালীসহ বেশ কিছু দুর্গম জনপদ পানিতে প্লাবিত হয়েছে । এতে পানি বন্দি হয়েছে পড়েছে অগনিত মানুষ। অনেকের মাছের ঘের, ফসলি জমি ও বসতভিটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

এছাড়া সদর উপজেলার রামদাসপুর এলাকার ৯নং রূপাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী- বুধবার মেঘনার পানি ১১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে যা, বিগত কয়েক বছরের রেকর্ড। যে কারনে ঝুকিতে পড়েছে বাধ। তবে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় দ্রুত বাঁধ মেরামতের কাজ চলছে বলে জানিয়েছে ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান। তিনি বলেন, যেসব পয়েন্ট ঝুকিতে আছে ওই সব পয়েন্ট পরিদর্শন করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তরা দ্রুত কাজ করে যাচ্ছেন।

এদিকে ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল দৌলতখানে দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করে হাজিপুর চরবাসীর জন্য বৃহস্পতিবার সকালে এক টন চিরা, প্রয়োজনীয় পরিমান গুড়, মোম বাতি, দিয়াশলাই ও অন্যান্য গৃহসামগ্রী পাঠিয়েছেন।

অপরদিকে ভোলার লালমোহন ও তজুমদ্দিনে জোয়ারের পানির প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেছেন ভোলা-৩ আসনের এমপি নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন। এসময় এমপি শাওন ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ জরুরি ভিত্তিতে মেরামতের জন্য ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশ প্রদান করেন।

Print Friendly

Related Posts