টাঙ্গাইলে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

আরিফুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের ভুঞাপুরে ছাব্বিশা গ্রামে এক মাদরাসাছাত্রীকে অপহরণ করে গণধর্ষণ মামলায় পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল।

বৃহম্পতিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে ট্রাইব্যুনালের বিচারক খালেদা ইয়াসমিন এই রায় ঘোষণা করেন।

রায় ঘোষণার সময় দুইজন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এরা হলেন মধুপুর উপজেলার চারালজানী গ্রামের বদন চন্দ্র মণি ঋষির ছেলে সঞ্জিত (২৮), একই উপজেলার গোলাবাড়ি গ্রামের শ্রি দিগেন চন্দ্র শীলের ছেলে গোপি চন্দ্র শীল (৩০)।

পলাতক আসামিরা হলেন একই এলাকার সুনীল চন্দ্র শীলের ছেলে সাগর চন্দ্র শীল (৩৩), সুনীল মণি ঋষির ছেলে সুজন মণি ঋষি (২৮) ও মণিন্দ্র চন্দ্রের ছেলে রাজন চন্দ্র (২৬)।

রাষ্ট্রপক্ষে এই মামলা পরিচালনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি নাছিমুল আকতার। আর মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ মামলার শুরু করে শেষ পর্যন্ত ভিকটিমকে আইনি সহায়তা দেন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি নাছিমুল আকতার জানান, ২০১২ সালে দণ্ডিত আসামিদের মধ্যে সাগর চন্দ্র শীলের সঙ্গে মোবাইলে পরিচয় হয় ভূঞাপুর উপজেলার ছাব্বিশা গ্রামের ওই মাদরাসাছাত্রীর। একই বছরের ১৫ জানুয়ারি ওই ছাত্রী সকালে বাড়ি থেকে মাদরাসায় যাওয়ার পথে শালদাইর ব্রিজের কাছে পৌঁছলে সাগর কৌশলে একটি অটোতে তাকে এলেঙ্গা নিয়ে যায়। সেখান থেকে মধুপুরে চারাল জানী গ্র্রামে তার বন্ধু রাজনের বাড়িতে উঠে। সেখানে তার চার বন্ধু ছাত্রীকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। সাগর হিন্দু বলে তার প্রস্তাব প্রত্যাখান করে মেয়েটি।

এ কারণে ওই রাতে সাগর রাজনের বাড়িতে আটক রেখে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে ১৭ জানুয়ারি রাতে তাকে বংশাই নদীর তীরে নিয়ে সেখানে তারা পাঁচজনে মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে ফেলে যায়। পরদিন ভোরবেলা স্থানীয়দের সহায়তায় মেয়েটিকে স্বজনরা এসে উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় ওই ছাত্রী বাদী হয়ে ভুঞাপুর থানায় ১৮ জানুয়ারি দণ্ডিতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ সুজন মণি ঋষিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়। ১৯ জানুয়ারি আসামি সুজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

সুজন তার জবানবন্দিতে সাগর, রাজন, সনজিত ও গবি চন্দ্র জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পুলিশ তদন্ত শেষে পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে এ মামলার রায়ে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত। বাদী পক্ষের আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক জানান, এই রায়ে তারা সন্তুষ্ট।

ছবি: মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া পাঁচ আসামির মধ্যে সঞ্জিত ও গোপি চন্দ্র শীল। অপর তিন আসামি পলাতক

Print Friendly

Related Posts