বিডি মেট্রো নিউজ ।। অবশেষে ফাঁসির রশিতে ঝুললেন তারা । ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে একাত্তরের নৃশংসতম যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের সাকা চৌধুরীকে। ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে একাত্তরের আলবদর কমান্ডার মুজাহিদকে। শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে দুজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
যুদ্ধকালে চট্টগ্রাম অঞ্চলে নজিরবিহীন নিষ্ঠুরতার জন্য ‘সাকা কোনো উদারতা পাওয়ার যোগ্য নয়’ বলে মন্তব্য করেছিল উচ্চ আদালত। আগামী মার্চে এই যুদ্ধাপরাধীর বয়স ৬৭ বছর হবে।
বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের অন্যতম হোতা ৬৮ বছর বয়সী মুজাহিদ সম্পর্কে আপিল বিভাগ বলেছিল, এ ধরনের নিষ্ঠুরতার প্রমাণ পাওয়ার পর অপরাধী সর্বোচ্চ দণ্ড না পেলে তা হবে ন্যায়বিচারের পরিহাস।
এ ফাঁসি কার্যকর করার মধ্য দিয়ে দেশের জন্য আরও একটি নতুন ইতিহাস রচিত হলো। স্বাধীন বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে কোনো সাবেক মন্ত্রীর ফাঁসির ঘটনাও এই প্রথম।
একাত্তরে নির্বিচারে অসংখ্য মানুষের প্রাণ সংহার করলেও শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত মরিয়া হয়ে প্রাণ বাঁচাতে চেয়েছেন দুই যুদ্ধাপরাধী। সব চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর রোববার প্রথম প্রহরে তাদের ফাঁসির দড়িতে ঝোলানো হয়।
সাকা চৌধুরীকে যে চার হত্যা-গণহত্যার দায়ে ফাঁসির কাষ্ঠে যেতে হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে- কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সমাজসেবক-দানবীর অধ্যক্ষ নূতন চন্দ্র সিংহকে হত্যা, রাউজানের সুলতানপুর গ্রামে তিনজনকে গণহত্যা, রাউজানের ঊনসত্তরপাড়ায় ৫০-৫৫ জনকে গণহত্যা, এবং চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মোজাফফর আহম্মদ ও তার ছেলে শেখ আলমগীরকে হত্যা। ট্রাইব্যুনালে সাকার বিরুদ্ধে আনা ২৩টি অভিযোগের মধ্যে এসব অভিযোগ ছিল যথাক্রমে ৩, ৫, ৬ ও ৮ নম্বর অভিযোগে।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হত্যা-গণহত্যা, আটক ও নির্যাতন, ধর্মগত ও রাজনৈতিক কারণে নির্যাতন করে হত্যার মতো বিভিন্ন ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে। পাশাপাশি সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটিতে (ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব) থাকা নেতা হিসেবে গণহত্যা সংঘটিত করা, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করা, ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনার মাধ্যমে হত্যা, নির্যাতন, বিতাড়ন ইত্যাদি ঘটনার দায়ও প্রমাণিত হয় তার বিরুদ্ধে।
এর মধ্যে বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে ফাঁসির দড়িতে ঝুললেন মুজাহিদ। তার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনা সাতটি অভিযোগের মধ্যে এটি ছিল ৬ নম্বর অভিযোগে।