যেভাবে ফাঁসি কার্যকর হলো দুই যুদ্ধাপরাধীর

বিডি মেট্রো নিউজ ।। শনিবার দিনগত রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় শীর্ষ দুই যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী (সাকা চৌধুরী) ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের।

রাতে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ার পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কারাগারে পৌঁছায় ফাঁসি কার্যকর করতে সরকারের নির্বাহী আদেশ। এরপর কারা কর্তৃপক্ষ শুরু করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া।

রাত সাড়ে আটটার দিকে সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদকে গোসল করানো হয়। ৯ থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে দেওয়া হয় রাতের খাবার। খাবারের মেন্যু ছিলো মুরগি, ডাল ও সবজি। তবে তাদের খাবার দিলে প্রথমে খাবেন না বলে জান‍ান। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ যখন জানায় এটাই তাদের শেষ খাবার, তখন সাকা খেলেও মুজাহিদ খাননি।

৯টা ৩৫ মিনিটে শেষবারের মতো দেখা করতে কারাগারে ঢোকেন সাকার পরিবারের সদস্যরা। তারা অবস্থান করেন ১০টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত। সাকার পরিবার বের হলে ঢোকেন মুজাহিদের পরিবারের সদস্যরা। তারা অবস্থান করেন সোয়া ১২টা পর্যন্ত।

পরিবারের সদস্যরা বিদায়ের পর সাড়ে ১২টার দিকে তওবা পড়ানো হয়। তওবা পড়ান কারাগার পুকুর পাড় সংলগ্ন মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা মনির হোসেন খান। এরপর ১২টা ৩৬ মিনিটে কনডেম সেল থেকে যমটুপি পরিয়ে দু’জনকে একসঙ্গে ফাঁসির মঞ্চে নেওয়া হয়। এসময় তাদের মধ্যে কোনো রিঅ্যাকশন ছিলো না।

তাদের দাঁড় করানো হয় একই মঞ্চে পাশাপাশি। মঞ্চটি বেশ পুরনো। এ মঞ্চেই কার্যকর হয় বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের ফাঁসি। পরে একই সময়ে একই সঙ্গে দু’জনের ফাঁসি কার্যকর করেন জল্লাদ শাজাহান ও রাজু। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম দু’জনকে একইসঙ্গে, একই সময়ে, একই মঞ্চে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলো।

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর মুজাহিদের মরদেহ আগে তোলা হয়। পরে তোলা হয় সাকার মরদেহ। পরে কারা চিকিৎসক ডা. বিপ্লব কুমার ও আহসান হাবিব, ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন আবদুল মালেকের তত্ত্বাবধানে ময়নাতদন্ত হয়। এসময় শুধু তাদের ঘাড়ের রগ কাটা হয়।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts