বিডি মেট্রোনিউজ ।। চলতি মাসের শেষের দিকে অথবা ডিসেম্বরের প্রথম দিকে সরকারি চাকরিজীবীদের অষ্টম বেতনকাঠামো চূড়ান্ত হবে। আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে সরকারি চাকরিজীবীরা বকেয়াসহ নতুন কাঠামো অনুযায়ী বেতন পাবেন। তবে নতুন বেতনকাঠামো চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, অর্থবিভাগ থেকে বেতন কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ভেটিং হয়ে আসার পর প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক কাজ শেষে তাতে রাষ্ট্রপতির অনুমতির জন্য বঙ্গভবনে পাঠানো হবে। রাষ্ট্রপতির অনুমতি পাওয়া গেলেই সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য পে-স্কেল গেজেট আকারে আগামী সোমবার বা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রকাশ করা হবে।
এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘কিছু দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী বেতনকাঠামোতে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। এতে সবার স্বার্থ রক্ষা হবে। চলতি মাসেই নতুন বেতনকাঠামোর গেজেট হবে বলে আশা করি। আমি আবার বলছি, নতুন বেতনকাঠামো যখনই চূড়ান্ত হোক না কেন, তা চলতি বছরের জুলাই থেকেই কার্যকর হবে।’
বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের দাবি থাকা সত্ত্বেও নতুন বেতনকাঠামোতে ‘টাইম স্কেল’ ও ‘সিলেকশন গ্রেড’ থাকছে না। তবে এর বিকল্প হিসেবে অন্য কিছু থাকছে। এ ক্ষেত্রে সরকারি চাকরিজীবীদের বছরভিত্তিক গ্রেড উন্নীতকরণ করা হবে। বছরভিত্তিক গ্রেড উন্নীতকরণের সময়সীমা থাকবে ১০ ও ৬ বছর। কোনো সরকারি চাকরিজীবী ১০ বছর চাকরি করার পর ১১তম বছরে তার গ্রেড স্বয়ংক্রিয়ভাবে উন্নীত হবে। এই গ্রেডের পর আরো ৬ বছর চাকরি করলে ১৭ বছরে এসে তার আরো একবার গ্রেড পরিবর্তন হবে। এ ক্ষেত্রে তার বেতন বৃদ্ধির পাশাপাশি আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধাও বাড়বে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান।
তিনি বলেন, গেজেটে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড নামে কিছু থাকছে না। কিন্তু এর বিপরীতে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা উল্লেখ থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে অর্থমন্ত্রী এই সুবিধাগুলো চূড়ান্ত করেছেন। আশা করা যাচ্ছে, এর ফলে চাকরিজীবীদের টাইম স্কেল ও সিলেকশ গ্রেড না পাওয়া নিয়ে আর কোনো অতৃপ্তি থাকবে না।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয়ে গেজেটে কিছু সুযোগ-সুবিধার কথা উল্লেখ থাকবে বলে জানা গেছে। একটি বিশেষ ক্যাটাগরির সিনিয়র অধ্যাপকদের সিনিয়র সচিবের মর্যাদা দেওয়া হতে পারে বলে তিনি জানান।
এ মাসের প্রথম দিকে বাংলাদেশ পারমাণবিক শক্তি কমিশনের বিজ্ঞানী ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের দুটি প্রতিনিধিদল অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে পৃথক বৈঠক করে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বহালসহ বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরে।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, অষ্টম পে-স্কেলের প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার আগে যেসব ক্যাডার সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল পেয়েছেন, তাদের এ সুবিধা বহাল রাখা হবে। এটা বাতিল করা হবে না। প্রজ্ঞাপন জারির আগে বাকি ক্যাডাররা সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল নিয়ে নিতে পারেন। তবে প্রজ্ঞাপন জারির পর সবকিছু নতুন নিয়মে চলবে।
তিনি বলেন, চাকরি যে গ্রেডে শুরু হয়, সেটা ঠিক থাকবে। এটা পরিবর্তন করা যাবে না। বিশেষ প্রণোদনাও দেওয়া হবে না। তবে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে তাদের কাজের এবং যোগ্যতার বিচারে নতুন কী করা যায়, সে বিষয়ে বিবেচনা করা হবে। যিনি যেখানে আছেন, তিনি সেখানেই থাকবেন। কারো মর্যাদা ক্ষুণ্ন করা হবে না।
তিনি আরো বলেন, ‘এবারের বেতন স্কেলে সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল থাকছে না। এটা একেবারে উঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটার আর প্রয়োজন পড়বে না। এ জন্য কোনো প্রকার প্রভাব পড়বে না বলে আমি মনে করি। সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল উঠিয়ে দিয়ে বিকল্প যে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তাতে সবাই খুশি হবেন। এটা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি।’