বিডিমেট্রোনিউজ ॥ উড্ডয়নরত বিমান জিম্মি করে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিদের বাসভবনে আঘাত হানার পরিকল্পনা করেছিল এলিট ফোর্স র্যাবের হাতে গ্রেফতারকৃত বাংলাদেশ বিমানের ফার্স্ট অফিসার সাব্বিরের।
মঙ্গলবার বিকেলে কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান।
তিনি বলেন, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে মিরপুরের দারুস সালাম এলাকায় জঙ্গি আস্তানায় জঙ্গি দ্বারা সৃষ্ট বোমা বিস্ফোরণে নিহত জেএমবি’র সদস্য আবদুল্লাহ’র ঘনিষ্ট সহযোগী জেএমবি সদস্য বিল্লাল হোসেনকে নারায়নগঞ্জ ফতুল্লা থেকে ২৬ অক্টোবর ব্যাপক অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে র্যাব-৪।
জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতেই মঙ্গলবার সকালে জেএমবি সদস্য ও বিমান নিয়ে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে মিরপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাংলাদেশ বিমানের ফার্স্ট অফিসার সাব্বির সহ চার জঙ্গিকে গ্রেফতার করে র্যাব-৪।
মুফতি মাহমুদ বলেন, গ্রেফতারকৃত পাইলট সাব্বির বিমান চালিয়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গের বাসভবনে আঘাত করার পরিকল্পনা করে। এছাড়াও বিমানের যাত্রীদের জিম্মি করে মধ্যপ্রাচ্যে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল।
তিনি বলেন, সাব্বির চাকুরীর ভাতা বাবদ ১০ লাখ টাকা পাওয়ার কথা ছিল, সেই টাকা জঙ্গি সংগঠনে দান করবেন বলে আব্দুল্লাহকে কথা দিয়েছিল।
সাব্বিরের পরিচয় সম্পর্কে মুফতি মাহমুদ জানান, মিরপুরের দারুস সালামের কলমপ্রভা নামক যে বাড়িটি আবদুল্লাহ ভাড়া নিয়েছিল সেই ফ্ল্যাট বাড়ির মালিকের সন্তান সাব্বির এমাম সাব্বির (৩১)।
তিনি বলেন, সাব্বির ২০০৯ সালে বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমী থেকে বিমান চালনার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। এরপর সে ২০১০ সাল হতে ২০১৪ সাল পর্যন্ত রিজেন্ট এয়ারওয়েজ এ চাকরি করেন। ওই সময় সে স্পেন থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে।
২০১৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ বিমানের পাইলট হিসেবে চাকরিরত সাব্বির। তিনি বাংলাদেশ বিমানের বোয়িং-৭৩৭ পরিচালনা করে থাকেন। তিনি সর্বশেষ সোমবার (৩০ অক্টোবর) ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন।
র্যাবের গণমাধ্যম শাখার প্রধান বলেন, গ্রেফতারকৃত সাব্বির তুর্কি থেকেও বিমান চালনার উপর প্রশিক্ষণ গ্রহন করে। সে দুবাই, কাতার, মাসকাট, সিংগাপুর, মালেয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এবং বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ ফ্লাইট ছাড়াও অন্যান্য আরো অনেক দেশে বাংলাদেশ বিমানের পাইলট হিসেবে কাজ করেছে।
সাব্বিরের সঙ্গে বাংলাদেশ বিমানের অন্য কেউ জড়িত ছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার মুফতি মাহমুদ বলেন: এরকম একটি ঘটনার পরিকল্পনা এটাই প্রথম।একজন পাইলটের বিস্তর পরিকল্পনা কি ছিল, অন্য পরিকল্পনা ছিল কিনা অথবা বিমানের অন্যান্য কেউ জড়িত কিনা এসব এখন বলা যাচ্ছে না, সেক্ষেত্রে তদন্তেই আসলে বের হয়ে আসবে সবকিছু।
মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুর দারুস সালাম এলাকা থেকে বিমান নিয়ে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে পাইলট সাব্বির (বাংলাদেশ বিমানের ফাস্ট অফিসার) সহ চার জঙ্গি সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন ।