বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় বাবা-মেয়ে হত্যার সঙ্গে নিহত ব্যক্তির স্ত্রী আরজিনা বেগম জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করছে পুলিশ। এরই মধ্যে তাকে অাটক করেছে পুলিশ। স্বজনদেরও দাবি, পারিবারিক কলহের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর উত্তর বাড্ডার ময়নারবাগ কবরস্থান রোডের একটি বাড়ির ছাদ থেকে জামিল শেখ এবং তার ৯ বছর বয়সী মেয়ে নুসরাতের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
জামিলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল। ঘটনা দেখে ফেলায় নুসরাতকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের ধারনা। গাড়ি চালক জামিল অক্টোবর মাস থেকে ময়নারবাগের ৩০৬ নম্বর বাড়ির চিলেকোঠায় ভাড়া স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে থাকতেন। তাদের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের বনগ্রাম এলাকায়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণপদ রায় বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে নিহত জামিল শেখের স্ত্রী আরজিনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা নেয়া হয়েছে। তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কে বা কারা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত তা জানা যাবে।
যে ঘরে খুন হয়েছে তার পাশের ঘরের একজন সাবলেট ঘটনার পর থেকে উপস্থিত নেই; এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি আমরাও শুনেছি। সাবলেট কে থাকত তা বাড়িওয়ালা কিংবা আশপাশের কেউ সঠিক তথ্য দিতে পারেনি। এ ঘটনার সঙ্গে ঘরের ভেতরের কেউ জড়িত কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এ যুগ্ম কমিশনার বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি যে, ঘরের ভেতরের কেউ সহযোগিতা না করলে হত্যাকাণ্ডটি ঘটানো সহজ হতো না।
টার্গেট করে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে জানিয়ে কৃষ্ণপদ রায় বলেন, আমরা সবগুলো বিষয় নিয়ে তদন্ত শুরু করেছি, ইলেকট্রনিক ডিভাইস দিয়ে কাজ করছি, ঘটনাটির তদন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, আশা করছি শিগগিরই আমরা এর সুরহা করতে পারব।
জামিলের একজন প্রতিবেশী তুহিন জানান, ঘটনার পর আরজিনা রুমের বাইরে ছাদের এক কোনায় বসে নিচুস্বরে কাঁদছিলেন। এ সময় তার শরীরে রক্ত এবং হাতে আঁচড়ের দাগ ছিল। ঘরে ঢুকে দেখতে পাই খাটের ওপর জামিলের মাথা দিয়ে রক্ত পড়ছে। নুসরাতের মুখের ওপর একটি বালিশ রাখা। তাদের মাঝখানে জামিলের ছেলে আলভি (৫) বসা অবস্থায় ছিল। তাদের পাশে পড়ে ছিল একটি কাঠের টুকরো। তবে সেখানে কোনো ধারালো অস্ত্র ছিল না।
জামিলের স্ত্রী সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের পর কি কথা হয়েছিল জানতে চাইলে তুহিন বলেন, তার স্ত্রী আমাকে জানায় রাতে ডাকাত এসেছিল, কিন্তু আমি যখন তাকে জিজ্ঞাসা করলাম আপনি কাউকে ডাকেননি কেন? তখন তিনি বলেন আমার মুখ চেপে ধরা হয়েছিল এবং হাত পা বাঁধা ছিল। তবে সকালে জামিলের স্ত্রীর হাত পায়ের বাঁধন কে খুলে দিয়েছে তার কোনো উত্তর তিনি দিতে পারে নি।
রাতে একসঙ্গে ভাত খেয়ে সাবলেটসহ সবাই এক সঙ্গে টেলিভিশন দেখছিলেন জানিয়ে জামিলের বড় ভাই ইবু বলেন, ১২ বছর আগে বিয়ে হলেও সাত-আট বছর ধরেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো।