ইয়াসির আরাফাত, পবিপ্রবিঃ পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সমাবর্তন বুধবার জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেষ হয়েছে। সমাবর্তনের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হারুনর রশীদ ও প্রো-ভিসি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী।অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সমাবর্তন বক্তা ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী ও বিশেষ অতিথি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতির ভাষণে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, “জ্ঞানের এ বিশাল রাজ্যে শুধু পাঠ্যপুস্তক অধ্যয়নে সীমাবদ্ধ থাকলেই চলবে না। পাঠ্যবিষয়ে সাথে সাথে বহির্জগতের জ্ঞান আহরণ করতে হবে। নিজেকে কর্মী ও জ্ঞানী করে তোলাই হবে তোমাদের মূল লক্ষ্য। তোমাদের উচিত ত্যাগ ও সত্যের অভিমুখী হওয়া। সেই সাথে দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তন করে সুষ্ঠু ও সবল মনের অধিকারী হওয়া। সদাচারণ, সদালাপ, উচ্চ চিন্তা ও সহজ জীবনাচারণ তোমাদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে। সেই সাথে থাকতে হবে কল্পনাশক্তি যা মানুষকে বড় করে, ভাবনার জগতকে প্রসারিত করে। বিশ্ববিদ্যালয় কেবল শিক্ষার্থীদের পাঠদান করে না, তাদের চিন্তার প্রসারতা বাড়ায়। গবেষণার মাধ্যমে সৃষ্টি করে নতুন জ্ঞানের যা যুগের চাহিদা পূরণে অবদান রাখে। “
রাষ্ট্রপতি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা সম্বন্ধে আরও বলেন, একবিংশ শতাব্দী তথ্য প্রযুক্তির যুগ। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এ যুগে বিশ্ব প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার বিকল্প নেই। আমি মনে করি পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় চতুর্থ শিল্প বিল্পবের গুরুত্ব উপলব্ধি করে পাঠ্য কারিকুলাম যুগোপযোগী করে সাজাবে। আমাদের শিক্ষার্থীদের গড়ে তুলবে বিশ্ব নাগরিক হিসেবে।
রাষ্ট্রপতি শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্যে বলেন, শিক্ষা জীবন শেষে তোমরা আজ কর্ম জীবনের পথে পা বাড়াচ্ছো। মনে রাখবে, কর্মজীবন নানা ঘাত-প্রতিঘাতে বিক্ষুব্ধ তরঙ্গের ন্যায়। তোমরা তোমাদের অর্জিত জ্ঞান, মেধা ও দক্ষতা দিয়ে সেই পথ পাড়ি দেবে। এ সমাজ ও দেশ তোমাদের অনেক দিয়েছে। তাই দেশ ও সমাজের প্রতি তোমাদের দায়িত্ববোধ অনেক। মেধা ও কর্মের মাধ্যেমে তোমরা এ মাতৃভূমির কল্যাণ করবে। বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে তুলে ধরবে উজ্জ্বলভাবে।
শিক্ষকদের উদ্দেশ্য করে রাষ্ট্রপতি বলেন, “শিক্ষক যখন তার আদর্শ থেকে দূরে সরে নানান প্রাপ্তির পেছনে ছুটেন, শিক্ষার্থীরা তখন নাবিকহীন নৌকার মতো দিক হারা হয়ে যায়। পথের দিশা পায় না। তাই আদর্শের প্রতি অবিচল থেকে আপনারা জ্ঞান অর্জন ও বিতরণে নিবেদিত থাকবেন।”
সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রিসহ ২ হাজার ৯২৮ জনকে ডিগ্রি প্রদান করেন। এর মধ্যে শিক্ষা জীবনে অসাধারণ কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ ৬৩ জনকে চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক প্রদান করেন রাষ্ট্রপতি।
গ্রাজুয়েট শিক্ষার্থীদের ও অতিথিদের উপস্থিতিতে পবিপ্রবিতে সফলভাবেই ২য় সমাবর্তন সম্পন্ন হয়েছে।