জুবায়ের চৌধুরী পার্থ, ভোলা: ভোলা সদর হাসপাতালটি ১০০ শয্যার হলেও এখানে দীর্ঘদিন ধরে ৫০ শয্যার জনবল দিয়ে চলছে হাসপাতালটির কার্যক্রম। এখানে ডাক্তারের ২২টি পদের মধ্যে কর্মরত রয়েছে মাত্র ১১ জন। অন্যদিকে সদরের টিবি ক্লিনিকে নেই কোন চিকিৎসক। এখানে ২টি মাত্র পদ থাকলেও সেখানে কোন ডাক্তার নেই। ফলে চিকিৎসকের ভয়াবহ সংকট দেখা দিয়েছে। এতে ব্যহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম। ভোগান্তিতে পড়ছে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা সাধারণ জনগণ।
বিশেষ করে ভোলা সদর হাসপাতালের উপর এখানকার মানুষ নির্ভরশীল থাকলেও সেখানে রয়েছে চিকিৎসকের ১১টি পদ শূন্য। হাসপাতালগুলোতে গাইনি, কার্ডিওলজিস্ট, সার্জারি ও চক্ষুসহ গুরুপ্তপূর্ণ বিশেষজ্ঞ পদ শূন্য। এসব গুরুপ্তপূর্ণ পদ শূন্য রোগীরা পাচ্ছে না প্রয়োজনীয় চিকিৎসা। অনেক রোগীকে আবার বাধ্য হয়ে ফিরে গিয়ে জেলার বাইরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। জেলার সর্বমোট ২০৬টি ডাক্তারের পদের মধ্যে ৮৩টি পদ শূন্য রয়েছে। এতে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন জেলার ১৮ লাখ মানুষ।
এদিকে জেলার মানুষকে উন্নত সেবা পৌছে দেয়ার লক্ষ্যে ৭তলা বিশিষ্ট ২৫০ শয্যার আধুনিক একটি জেনারেল হাসপাতাল স্থাপিত হলেও সেটি এখনো চালু হয়নি। কবে নাগাদ চালু হবে তার নির্ধারিত সময়ও এখনো নির্ধারন হয়নি। যে কারনে উন্নত চিকিৎসা সেবাও থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে ভোলার জনগন।
তবে ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালটি চালু হলে প্রয়োজনীয় সব ধরনের চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব হবে বলে মনে করছেন জেলা সিভিল সার্জন। অন্যদিকে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে চিকিৎসক সংকটের কারনে দীর্ঘদিন থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এখানকার মানুষকে ঢাকা বরিশাল গিয়ে চিকিৎসা করা হচ্ছে। যারফলে একদিকে যেমন বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে অন্যদিকে সীমাহিন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে হচ্ছে জেলার মানুষকে।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সুত্র জানিয়েছে,ভোলা সদর হাসপাতালে ৩ বছরের অধিক সময় ধরে কার্ডিওলজিস্ট, চক্ষু বিশেষজ্ঞ নেই। এছাড়াও জেলার অন্যনান্য হাসপাতালে সার্জারি, গাইনি, কার্ডিওলজিস্ট ও চক্ষু চিকিৎসব না থাকায় চিকিৎসা সেবা অনেকটা ভেঙ্গে পড়েছে।
জনবল সংকটের পাশাপাশি সমস্যা রয়েছে প্রয়োজনীয় উপকরণেও। বেশীরভাগ হাসপাতালে ইসিজি ও এক্স-রে মেশিন নষ্ট। হচ্ছে না বড় ধরনের কোন অপারেশন। ক্লিনিক বা ডায়াগনিস্টক সেন্টারে গিয়ে পরীক্ষা নিরিক্ষা করতে হচ্ছে রোগীদের। টিবি ক্লিনিকে চিকিৎসক না থাকায় যক্ষা রোগীরাও ঠিকমত চিকিৎসা পাচ্ছেন না।
এ ব্যাপারে ভোলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তৈয়বুর রহমান বলেন, চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতি মাসেই চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়ে থাকে কিন্তু এখন পর্যন্ত জনবল দেয়া হয়নি। তবুও আমরা সাধ্যমত চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। কিছু হাসপাতালে ইউনিয়ন ক্লিনিক থেকে চিকিৎসকদের দিয়ে সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালটি চালুর অপেক্ষায় রয়েছে, সেটি চালু হলে স্বাস্থ্য সেবার এমন সমস্যা থাকবে না।