কলকাতাবাসীর নজর কাড়ল আর্টভার্স-এর প্রথম চিত্রপ্রদর্শনী

সিদ্ধার্থ সিংহ: বিয়াল্লিশ জন চিত্রশিল্পী, আলোকচিত্রী এবং ভাস্কর শিল্পীর বিভিন্ন মাপের পঁচাশিটি শিল্পকর্ম নিয়ে আর্টভার্স শুরু করল তাদের পথচলা। যেমন ছিলেন প্রফেশনাল শিল্পী, তেমন ছিলেন নতুন প্রজন্মের এক ঝাঁক তরুণ শিন্পী। মূলত অয়েল, অ্যাক্রেলিক, রেখাচিত্র, মধুবনী, রেজিনা আর্ট এবং ভাষ্কর্য থাকলেও, ছিল জলরঙের চোখ ধাঁধানো ছবিও।

গ্যালারি গোল্ড-এ প্রদীপ জ্বালিয়ে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করলেন শিল্পী ওয়াসিম কপূর, প্রাবন্ধিক নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি, মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান এবং বাংলা সিরিয়ালের প্রাণপুরুষ লীনা গঙ্গোপাধ্যায়।

উপস্থিত ছিলেন চিত্রশিল্পী যোগেন চৌধুরী, চিত্রশিল্পী তাপস কোনার, বিশিষ্ট চিত্রপরিচালক গৌতম ঘোষ-সহ আরও অনেকে।

title-1

যখন গোটা পৃথিবী জুড়ে ছবির বাজারে ভয়ানক মন্দা নেমে এসেছে, তখন এই ধরনের চিত্রপ্রদর্শনী করার সাহস পেলেন কী করে? এই প্রসঙ্গে আর্টভার্স-এর কর্ণধার শুভঙ্কর সিংহ, যিনি ইতিমধ্যে ‘গভ : এনসিয়েন্ট এলিয়েন্স আর আ মিথ’  নামে একটি ঢাউস ইংরেজি বই লিখে গোটা বিশ্ব জুড়ে সাড়া ফেলে দিয়েছেন, যাঁর ছবি প্রদর্শিত হলেই বিদেশ থেকে বায়ার্স এসে কিনে নিয়ে যান ছবি, এই মুহূর্তে যিনি বিগ বাজেটের দু’-দুটো ছায়াছবি করার জন্য অপেক্ষা করছেন, সেই শুভঙ্কর সিংহ বললেন— আমি বিশ্বাস করি, ঠিকঠাক ছবি যদি ক্রেতাদের সামনে তুলে ধরা যায়, ছবি বিক্রি হবেই। আজ না হোক কাল, কাল না হোক পরশু। তাই আমি ঠিক করেছি, এ বার থেকে নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের ছবি আমি সরাসরি কিনে নেব এবং তার পর সেই ছবি শুধু এ দেশের মাটিতেই নয, দরকার হলে় পৃথিবীর অন্যান্য দেশে নিয়ে গিয়েও প্রদর্শনী করব। আমি বিশ্বাস করি, আমার নির্বাচিত ছবিগুলো বিক্রি হবেই। আর এই ভরসাই় আমাকে সাহস জুগিয়েছে এই প্রদর্শনী করার। আমার পাশে অনেকেই এসে দাঁড়িয়েছেন। মাথার উপর হাত রেখেছেন। আর স্যার যোগেন চৌধুরী, স্যার ওয়াশিম কপূর, পরিচালক সন্দীপ রায়ের মতো জ্ঞানীগুনীরা যখন আমার সঙ্গে আছেন, আমি সফল হবই।

led-1

সফল যে তিনি হবেনই, তার প্রমাণ পাওয়া গেল আজ বিয়াল্লিশ জন শিল্পীর এই পঁচাশিটি শিল্প নিদর্শনে। এখানে যেমন ধরা পড়েছে, বিরহ, যন্ত্রণা, হিংসা, বিদ্বেষ, ষড়যন্ত্র। তেমনি ধরা পড়েছে নিসর্গ, প্রেম, ফোটোগ্রাফির মতো কাজও। এই প্রদর্শনী না দেখলে জীবনে একটা বড় অপ্রাপ্তি থেকে যাবে। বিশেষ করে উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন দিশারী গঙ্গোপাধ্যায়, আদিত্য কর্মকার, জয়তী সাউ,  সৌভিক সরকার, পাপিয়া চক্রবর্তী, প্রতীক মজুমদার, ময়ূখ চক্রবর্তী।

কিন্তু এত নাম থাকতে হঠাৎ ‘আর্টভার্স’ কেন?

এ প্রসঙ্গে আর্টভার্সের প্রতিষ্ঠাতা-কর্ণধার শুভঙ্কর সিংহ বললেন— বিজ্ঞানীরা যখন জানতেন ব্রহ্মাণ্ড একটাই, তখন তার নাম দিয়েছিলেন উইনিভার্স। পরে যখন বুঝলেন ব্রহ্মাণ্ড আসলে একটা নয়, তখন তার নাম দিলেন মাল্টিভার্স। আমি এমন একটা দগৎ তৈরি করতে চাই, যেখানে শুধু  আর্টিস্ট আর তাঁদের আর্টই থাকবে। তাই নাম দিয়েছি ‘আর্টভার্স।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts