বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ ২৯ ফেব্রুয়ারি শনিবার মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের নবনির্মিত ৯টি শিল্প কারখানার একত্রে শুভ উদ্বোধন হতে যাচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলায় অবস্থিত মেঘনা ইকোনমিক জোনে ৩টি, মেঘনা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমিক জোনে ৩টি, আনন্দবাজারে ২টি ও মেঘনাঘাটে অপর ১টি শিল্প কারখানার শুভ উদ্বোধন করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এম.পি।
বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন শিল্প মন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এম.পি, বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি এম.পি, নৌ পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এম.পি, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকা এবং বাংলাদেশ ফেডারেশন অব চেম্বার এন্ড কমার্স (এফবিসিসিআই) এর সম্মানিত প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম। শিল্প কারখানা গুলো নিম্নরূপ :
১. মেঘনা সুগার রিফাইনারী লিমিটেড : জার্মানী, ফ্রান্স, থাইল্যান্ড, চীন এবং ভারতের সর্বাধুনিক মেশিনারী দ্বারা প্রস্তুত সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় এ কারখানায় বাংলাদেশে প্রথম দানাদার চিনির সঙ্গে তরল চিনি উৎপাদিত হচ্ছে। দৈনিক ৩৫০০ টন উৎপাদনের ক্ষমতা সম্পন্ন এ শিল্পে ১০০০ লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দেশীয় চাহিদা পূরণের পাশাপাশি নেপাল এবং ভূটানে এ পণ্য রপ্তানী করা হবে।
২. সোনারগাঁ সীড্ ক্রাশিং মিলস্ লিমিটেড : জার্মানী, সুইডেন, ব্রাজিল, ইটালী, চীন, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র এবং থাইল্যান্ডের আধুনিক মেশিনারী দ্বারা প্র্স্তুত বাংলাদেশের বৃহত্তম এ সীড্ ক্রাশিং মিলে বাংলাদেশে প্রথম বারের মত লিকুইড লেসিথিন এর পাশাপাশি পাউডার লেসিথিন এই কারখানা থেকে উৎপাদিত হচ্ছে, যা বেকারী, ঔষধ শিল্প কারখানা, ডেইরী এবং ফিড এর অপরিহার্য্য উপাদান সয়ামিল হিসেবে বিবেচিত। প্রাণীজ আমিষের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে `Better Ingredients for Better Feeds’ এ স্লোগানের সার্থক রূপায়ন এ শিল্প। এর উৎপাদন ক্ষমতা দৈনিক ৫৫০০ টন; এখানে ৬০০ লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। দেশীয় চাহিদা পূরণের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়া, ইউরোপ, ভারত এবং চীনে এ পণ্য রপ্তানী করা হবে।
৩. মেঘনা বলপেন এন্ড এক্সেসরিজ এমএফজি লিমিটেড : দক্ষিণ কোরিয়া, চীন এবং ভারতের আধুনিক স্বয়ংক্রিয় মেশিনে উন্নতমানের বলপেন তৈরীর এ কারখানায় প্রতিদিন ৮ লক্ষ বলপেন উৎপাদিত হচ্ছে। দেশীয় চাহিদা পূরণের পাশাপাশি নেপাল এবং ভিয়েতনামে এ বলপেন রপ্তানীর সুযোগ রয়েছে। এখানে ৩০০ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে।
৪. মেঘনা নুডুল্স এন্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরী লিমিটেড : জাপান, চীন এবং ইউরোপের অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে (state-of- the-art-technology ) প্রস্তুত এ শিল্পে বাৎসরিক ৪০০০০ টন বিস্কুট, ১৯০০ টন কেক, ২০০০০ টন নুডুল্স, ৪০০০ টন ওয়েফার, ৮০০০ টন চকলেট, ৪০০০ টন স্নেক্স, ১২০০০ টন চানাচুর এবং ৬৫০০ টন কেন্ডি ও ললিপপ্ তৈরী হচ্ছে। এখানে ৪০০০ লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে।
৫. সোনারগাঁ প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড : চীন এবং ভারতের আধুনিক স্বয়ংক্রিয় মেশিনারী দ্বারা নির্মিত এ কারখানা মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ এর সকল শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রিন্টিং এবং প্যাকেজিং সল্যুশান হিসাবে কাজ করবে। দৈনিক ৪,৪২,০০০ পিস কার্টুন ও প্যাকেজ উৎপাদনের ক্ষমতা সম্পন্ন এই কারখানায় ৪৫০ জন লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে।
৬. ফ্রেশ ওয়েল্ডিং ইলেক্ট্রোড্স এন্ড ওয়্যার : তুরস্ক, চীন এবং ভারত থেকে আমদানীকৃত সর্বাধুনিক মেশিনারী দ্বারা প্রস্তুত বাংলাদেশে প্রথম ওভেন সিস্টেম ওয়েল্ডিং ইলেক্ট্রোড্ (প্রতিমাসে ১০০০ টন) ও ফ্লাক্স কোরড্ আর্ক ওয়েল্ডিং ওয়্যার (প্রতিমাসে ৪০০ টন) এখানে তৈরী করা হচ্ছে। এখানে ১০০ লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে।
৭. মেঘনা ফ্রেশ এলপিজি লিমিটেড : সর্বাধুনিক ইউরোপিয়ান মেশিনারী দ্বারা স্থাপিত এ কারখানা এলপিজি সিলিন্ডার প্রস্তুত এবং এলপিজি বোতলজাত করার একক বৃহত্তম শিল্প প্রতিষ্ঠান। এখানে ১০,০০০ টন এলপিজি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন গুদাম রয়েছে, যা বাংলাদেশে এলপিজি’র বৃহত্তম স্টোর হাউজ হিসেবে বিবেচিত। এর উৎপাদন ক্ষমতা প্রতিদিন ৩০০ টন এবং ১২ কেজি পরিমাণ সিলিন্ডার দৈনিক ৪০০০ পিস্ । এখানে ৩৫০ জন লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে।
৮. সোনারগাঁও শিপ বিল্ডার্স এন্ড ডক্ইয়ার্ড লিমিটেড : নৌ-পথে পণ্য পরিবহণ সুগম রাখার জন্যে ইউরোপ এবং চীনের সর্বাধুনিক মেশিনারী দ্বারা নির্মিত এ কারখানায় ৫০০০ উডঞ ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন অয়েল ট্যাংকার, কার্গো শিপ, বাল্ক শিপ, গ্যাস শিপ, কন্টেইনার শিপ প্রভৃতি তৈরী করা হচ্ছে। দেশীয় চাহিদার পাশাপাশি ইউরোপ এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এ জাহাজ রপ্তানীর সুযোগ রয়েছে। এখানে ১৫০০ দক্ষ জনবলের কর্মসংস্থান হয়েছে।
৯. ফ্রেশ সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (ইউনিট-২) : জার্মানীর সর্বাধুনিক মেশিনারী দ্বারা সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে নির্মিত এ কারখানায় উন্নত মান সম্পন্ন, পরিবেশ বান্ধব সিমেন্ট উৎপাদিত হচ্ছে। এখানে দৈনিক ১০০০০ টন সিমেন্ট উৎপাদন সহ ১০০০ লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। এ সিমেন্ট দেশীয় চাহিদার যোগান শেষে ভারতেও রপ্তানীর সুযোগ রয়েছে।
উক্ত ৯টি শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠায় প্র্য়া ৪০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে।