সব মাথাব্যথাই মাইগ্রেন নয়

অধ্যাপক ডা. এমএস জহিরুল হক চৌধুরী

d. zahirul

মাথাব্যথা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে। প্রতিবছর শতকরা প্রায় ২০ শিশু ও কিশোর মাথাব্যথায় আক্রান্ত হয়ে থাকে। তবে সব ধরনের মাথাব্যথা মোটেও মাইগ্রেন নয় ।

দৃষ্টিস্বল্পতা, মস্তিষ্কের টিউমার ইত্যাদি কারণেও মাথাব্যথা হতে পারে। মাথাব্যথা প্রধানত দুই ধরনের হয়ে থাকে। এর একটি হলো- প্রাইমারি হেডেক। যেমন- মাইগ্রেন, টেনশন টাইপ হেডেক, ক্লাস্টার হেডেক ইত্যাদি। আরেকটি হলো- সেকেন্ডারি হেডেক। যেমন- সাইনোসাইটিস, মাসটয়ডাইটিস, গ্লুকোমা, স্ট্রোক, মস্তিষ্কের টিউমার ইত্যাদি।

চিকিৎসা ও প্রতিকার : মাইগ্রেন থেকে রেহাই পাওয়ার কিছু উপায়- প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে হবে এবং সেটা হতে হবে পরিমিত। অতিরিক্ত বা কম আলোতে কাজ করা যাবে না। কড়া রোদ ও তীব্র ঠাণ্ডা পরিহার করতে হবে। বেশি সময় ধরে কম্পিউটারের মনিটর ও টিভির সামনে না থাকা ।

মাইগ্রেন শুরু হয়ে গেলে, প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা (বিশেষ করে বমি হয়ে থাকলে), বিশ্রাম করা, ঠাণ্ডা কাপড় মাথায় জড়িয়ে রাখা উচিত। কিছু খাবর মাইগ্রেনের সমস্যা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। যেমন- ম্যাগনেশিয়ামসমৃদ্ধ খাবার ঢেঁকি ছাঁটা চালের ভাত, আলু ও বার্লি মাইগ্রেন প্রতিরোধক। বিভিন্ন ফল বিশেষ করে খেজুর ও ডুমুর ব্যথা উপশম করে। সবুজ শাকসবজি, ক্যালসায়াম ও ভিটামিন-ডি মাইগ্রেন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তিল, আটা ও বিটে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। আদার টুকরো বা রস দিনে দুবার পানিতে মিশিয়ে খেতে পারেন।

মাইগ্রেন হলে যেসব খাবার না খাওয়াই ভালো সেগুলো হচ্ছে- চকোলেট, ডেইরি প্রডাক্ট, টমেটো, সাইট্রাস জাতীয় ফল, গম জাতীয় খাবার ও চীনাবাদাম। তবে ব্যক্তিভেদে ভিন্ন ভিন্ন খাবারে মাইগ্রেন সমস্যা দেখা দিতে পারে। একটা ডায়রিতে নোট করে রাখতে পারেন কোন কোন খাবার ও কোন কোন পারিপার্শ্বিক ঘটনায় মাইগ্রেন ব্যথা বাড়ছে বা কমছে। এক সপ্তাহ নোট করলে আপনি নিজেই নিজের সমাধান পেয়ে যাবেন। তবে ব্যথা বেশি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

লেখক : অধ্যাপক, ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি বিভাগ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সস ও হাসপাতাল

চেম্বার : ল্যাব- এইড, ধানমন্ডি ও পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লি. শ্যামলী শাখা, ঢাকা
০১৮৬৫৪৪৪৩৮৬; ০১৮৪৩৬১৬৬৭০

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts