এম. এ. কাদের
মানুষের মৌলিক অধিকারের মধ্যে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা অধিক গুরুত্ব বহন করে। প্রতিটি মানুষের সঠিক চিকিৎসা পাওয়া তার মৌলিক অধিকার। দেশের প্রতিটি নাগরিককে সঠিক চিকিৎসা সেবা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। এক্ষেত্রে গড়িমসি করার কোন সুযোগ নাই। চিকিৎসা ক্ষেত্রে অব্যবস্থাপনার কারণে মানুষের জীবন পর্যন্ত বিপন্ন হতে পারে।
দেশে করোনাভাইরাস ৮মার্চ শনাক্ত হওয়ার পর থেকে অদ্য ২১জুন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ১ লক্ষ ১২ হাজার ২ শত ৬ জন, মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৪ শত ৬৪ জন । দিন যত যাচ্ছে আক্রান্ত তত বেশি বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে গরীব দেশ হিসাবে আমরা সামাল দিতে পারবো কিনা এ নিয়ে সংশয় আছে। কাজেই সংক্রমণ আর যাতে না বাড়ে, সেদিকে আমাদের মনোযোগী হওয়া দরকার। করোনা আমাদের দেখিয়ে দিল দেশে চিকিৎসা ব্যবস্থা কত দুর্বল।
কোন কোন সময় সাধারণ রোগী পর্যন্ত করোনা সন্দেহে চিকিৎসা না পেয়ে এ হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতাল ছোটাছুটি করে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ছেন। টেলিভিশনে দেখেছি, দেশের শীর্ষস্থানীয় মিডফোর্ড হাসপাতালের সামনে অসুস্থ স্বামীকে ভ্যানের উপর রেখে স্ত্রীর আহাজারী, করোনা সন্দেহে কেউ এগিয়ে আসেনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জেনেছি, একই পরিবারের সবাই করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্ত্রী-সন্তানের সামনে আপনজন ভেন্টিলেশনের অভাবে ছটফট করে মারা যেতে।
তাছাড়া দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে করোনা সন্দেহে জরুরী চিকিৎসা সমুহ যেমন- হার্টএ্যাটাক, স্ট্রোক, কিডনি, ডায়রিয়া, বিভিন্ন দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের চিকিৎসা ঠিকমত হচ্ছে না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এসব জরুরী রোগী ও অভিভাবকরা হাসপাতালে যেতে অনিহা প্রকাশ করায়, বিনা চিকিৎসায় অনেকেই বাড়িতেই মৃত্যুবরণ করছে।
সবচেয়ে দুঃখজনক ঘটনা, ইতোমধ্যে ২জন মন্ত্রীসহ উর্ধ্বতন বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। তাছাড়া এপর্যন্ত সারাদেশে ২০ জন বিচারক, ১৫ জন এমপি করোনা আক্রান্ত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য বাংলাদেশের সফলতম ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি এস. আলম গ্রুপের পরিচালক, ৫টি ব্যাংক সহ ৩৫ টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক মোরশেদুল আলম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১টি ভেন্টিলেশনের অভাবে পরিবারের সকলের সামনে করুণ মৃত্যুবরণ করেন।
দেশে এস.আলম গ্রুপের মত অনেক শিল্পপতি, আমলা, জনপ্রতিনিধি আছেন, যাদের সাধারণ জ্বর-কাশিতে চিকিৎসা ও চেকআপের জন্য বিদেশে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে আসেন। অথচ হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েও মোরশেদুল আলমকে সামান্য ১টি ভেন্টিলেশনের জন্য মারা যেতে হবে এটা কল্পনার অতীত। এর থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত শুধু সরকার নয়, সমাজের বিত্তবানরা চিকিৎসা ব্যবস্থার দিকে খেয়াল করলে হাজার হাজার ভেন্টিলেটর আইসিইউ সংযুক্ত হাসপাতাল তৈরি করা সম্ভব, এতে নিজেদের স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ দেশের মানুষ উপকৃত হতো।
দেশ উন্নয়নে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সবচেয়ে গুরুত্ব বহন করে শিক্ষা ও চিকিৎসা। স্পর্শকাতর এ দুটি বিষয়কে কোনো ভাবেই অবহেলা করার সুযোগ নাই, কিন্তু দুর্নীতি অদক্ষতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে এই দুটি বিষয়ে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। ২০১৯-২০ অর্থবছরে চিকিৎসা খাতে বাজেট ছিল ২৫ হাজার ৭শত ৩২ কোটি টাকা। দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি আস্থা না থাকার কারণে মানুষ জীবন বাঁচানোর তাগিদে, অনেক কষ্ট ও ব্যয়বহুল হলেও সঠিক চিকিৎসা নিতে ভারতসহ বিদেশে যেতে বাধ্য হচ্ছে।
একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে দেশে করোনা সংক্রমনের পূর্ব পর্যন্ত আমাদের দেশ থেকে প্রতিদিন শুধু ভারতে ৮ থেকে ১০ হাজার লোক যাচ্ছে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক লোকই চিকিৎসার জন্যই ভারতে গিয়ে থাকে। এছাড়া ধনী, উচ্চবিত্তরা পৃথিবীর উন্নত দেশে যেমন সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সৌদিআরব, ইংল্যান্ড, আমেরিকায়, চিকিৎসা ও শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য গিয়ে থাকে। ভারতে চিকিৎসা করাতে যাওয়া এ সমস্ত রোগীদের সম্পর্কে জানা যায়, দেশে সঠিক রোগ নির্ণয় না হওয়া, চিকিৎসকদের রোগী দেখার ক্ষেত্রে অমনোযোগী, দুর্ব্যবহার, কম সময় দেওয়া , রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে অহেতুক অধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে দেওয়া, ডাক্তারের মনোনীত ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পাঠানো, এসব নানা কারণে দেশে চিকিৎসার উপর আস্থা না থাকায় রোগীরা অধিক হারে বিদেশে সঠিক চিকিৎসার জন্য যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
এছাড়া অনেক সময় ভুল চিকিৎসার কারণে জীবন বাঁচানোর জন্য তারা ভারতে যাচ্ছেন। এতে প্রতিদিন হাজার হাজার রোগী চিকিৎসার জন্য কোটি কোটি টাকা ভারতসহ বিদেশে নিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের দেশে চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর আস্থার অভাব শুধু সাধারণ রোগীদেরই নয়, অনেক উর্ধ্বতন র্কমর্কতা, সরকারি আমলা, এমপি মন্ত্রীদেরও।
দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর আস্থা না থাকার কারণ, প্রয়োজনীয় দক্ষ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরি না হওয়া, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের স্বল্পতা, মেধাবী চিকিৎসকদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন না করা, কম মেধাবী শিক্ষার্থীদের চিকিৎসক হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা। এছাড়াও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে জরুরী রোগী দেখানোর ক্ষেত্রে অধিক সিরিয়াল। বেশির ভাগ নির্ভুল রোগ নির্নয়ের ক্ষেত্রে এক ডায়গনষ্টিক সেন্টারের সাথে অন্য ডায়গনষ্টিক সেন্টারের রিপোর্টে মিল না থাকা। টেকনিশিয়ান এর অভাব, প্রয়োজনীয় ডাক্তারের স্বল্পতা, ডাক্তারদের বাসা ও চেম্বারের অভাব, নিরাপত্তার অভাব, এছাড়া প্রভাবশালীদের প্রভাবের কারনে চিকিৎসা ব্যবস্থাকে অনেক পিছিয়ে রেখেছে।
দেশে প্রতি বছর ৩৬টি সরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে ৪ হাজার ৬৮ জন ও প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ থেকে ৬ হাজার ২৩৩ জন অর্থাৎ ১০ হাজার ২৯৯জন কমবেশি ডাক্তার বেরিয়ে থাকেন, অথচ হাসপাতালগুলোতে ডাক্তারের সংকট প্রায় লেগেই থাকে। এতে করে প্রতি উপজেলায় ৩/৪ লক্ষ মানুষের চিকিৎসা ব্যবস্থা ডাক্তারের স্বল্পতায় ঠিকমত চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠেনা।অথচ পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো চিকিৎসার ক্ষেত্রে অধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকে। গ্রিসে ২২৮ জনে ১ জন ডাক্তার, স্পেনে ২০০ জনে ১ জন ডাক্তার, অস্ট্রেলিয়ায় ২৯৫ জনে ১জন ডাক্তার, ফ্রান্সে ২৯৬ জনে ১ জন ডাক্তার, আমেরিকায় ২৭৮ জনে ১ জন ডাক্তার সেবা দিয়ে থাকেন।
DMDC এর তথ্যমতে,আমাদের দেশে মোট ডাক্তারের হিসাবে ১৮৪৭ জনে ১ জন ডাক্তার নিয়োজিত আছে। প্রত্যেক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ২০/২৫ জন ডাক্তারের বসার জায়গার ও আবাসিক (থাকার জায়গা) সংকট রয়েছে। সমাজের মেধাবী শিক্ষার্থীরাই ডাক্তারীর মতো এই মহৎ পেশায় মানুষের সেবা দেওয়ার জন্য নিযুক্ত থাকেন, কিন্তু এদের ন্যূনতম নিরাপত্তা নাই। অনেক সময় গ্রামের অশিক্ষিত মূর্খ সন্ত্রাসী যেনতেন কারণে লাঞ্চিত করতেও দ্বিধা বোধ করে না বেশিরভাগ হাসপাতালে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাবে অপরিষ্কার এবং দুর্গন্ধে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। হাসপাতালগুলো নিজেরাই রোগী হয়ে আছে। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাব, কিছু কিছু যন্ত্রপাতি থাকলেও সেগুলো অকেজো হয়ে পড়ে আছে।
দেশে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অনেক অভাব রয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ডিগ্রী নেওয়ার ক্ষেত্রে আসন একেবারেই কম। তাছাড়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদেরকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন না করার কারণে বেশির ভাগ চিকিৎসক দেশের বাইরে চলে যায়, ফলে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় চিকিৎসকের স্বল্পতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। উপজেলা শহরগুলোতে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পোস্ট থাকলেও অধিকাংশ হাসপাতালগুলোতে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নেই বললেই চলে। রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালগুলোতে যন্ত্রপাতির অভাব রয়েছে। আবার অনেক হাসপাতালে যন্ত্রপাতি থাকলেও টেকনিশিয়ান এর অভাব আছে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রোগীর রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে কিছু ডাক্তারদের সাথে ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর একটা বড় কমিশন বাণিজ্য রয়েছে। তাছাড়া অনেক ক্ষেত্রে রিপোর্ট এর ফলাফল এক ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর সাথে অন্য ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর সাথে মিল থাকেনা। অনেক ডাক্তারের নির্ধারিত ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে রিপোর্ট না করলে গ্রহন করতে চান না। এ কারণেও দেশের চিকিৎসার প্রতি অনেক রোগীর আস্থা নষ্ট হচ্ছে। নির্ভুল রোগ নির্ণয় এবং সঠিক চিকিৎসার জন্য বেশিরভাগ রোগীরা ভারতে চলে যাচ্ছে। এছাড়াও ভুল রোগ নির্ণয়, ভুল অপারেশন ও ওষুধের দাম অধিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় রোগীরা দেশের চিকিৎসার উপর বিমুখ হচ্ছে।
দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর বর্তমান সরকারের সঠিক পরিকল্পনা ও নজরদারির কারণে ইদানিং আমরা অনেক সুফলও পাচ্ছি। গত কয়েক বছর আগে হার্টের চিকিৎসা ব্যবস্থা দেশে ভালো না থাকায় অধিকাংশ রোগী মারা যেত। শুধু ধনী সামর্থ্যবানরা ভারতসহ বিদেশে চিকিৎসা নিতে পারত কিন্তু ইদানিং সরকারের সঠিক পরিকল্পনার কারণে আমাদের দেশে স্বল্প খরচে অনেক ভালো নির্ভুল চিকিৎসা হচ্ছে। এছাড়াও দেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য অত্যাধুনিক আন্তর্জাতিক মানের নিউরোসাইন্স হাসপাতাল, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, জাতীয় হার্ট ফাউন্ডেশন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন হাসপাতাল সহ বেশ কয়েকটি সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে হাসপাতাল তৈরি হওয়ায় আমরা তার সুফল ভোগ করছি।
তাছাড়া ইতিমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজের পাশেই আন্তর্জাতিক মানের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। এখানে সর্ব প্রকার জটিল রোগের অপারেশন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশের জনগণের জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থা অধিক গুরুত্ব বহন করে এবং বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর হওয়ায় সরকারকে অবশ্যই দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে নিরপেক্ষতার সাথে দুর্নীতি দমন করে চিকিৎসা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে হবে।
আমাদের মনে রাখতে হবে সবচেয়ে মেধাবীরাই ডাক্তারীর মত মহৎ পেশায় সেবা দিয়ে থাকেন। তাদের অবহেলা করার কোন সুযোগ নাই। তাদের বেতন সহ সর্ব প্রকার সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। যোগ্য ডাক্তারদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন হলে মেধাবী ডাক্তারদের বিদেশে যাওয়া বন্ধ হবে এবং দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার অনেক উন্নয়ন ঘটবে, এতে দেশের জনগণের চিকিৎসার প্রতি আস্থা ফিরে আসলে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাওয়া বন্ধ হবে, ফলে দেশের টাকা দেশেই থাকবে।
আধুনিক ও উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা শুধু ঢাকা কেন্দ্রিক নয়, পুরাতন জেলা শহর পর্যন্ত ছডি়য়ে দিতে হবে। বর্তমানে দেশে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেক বেড়ে গেছে, প্রচুর মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছে, সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ায় বেশিরভাগ রোগী মারা যাচ্ছে। অন্তত প্রত্যেক মেডিকেল কলেজে করোনারী কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) চালু থাকলে বেশীর ভাগ রোগী বাঁচানো সম্ভব হবে। হাসপাতালগুলোতে ডাক্তার সরবরাহের ধারাবাহিকতা থাকতে হবে। কোন সময় ২০ জন, আবার কোন সময় ৪ জন থাকলে চিকিৎসার বিঘ্ন ঘটবে, এতে মানুষের আস্থা হারাবে।
উপজেলা শহরগুলোতে ডাক্তারের পোস্টিং এর ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব বন্ধ রেখে নিরপেক্ষতার সাথে পোস্টিং দিতে হবে। ডাক্তারদের ডিউটির ক্ষেত্রে সেবা মূলক মনোভাব ও আন্তরিকতা থাকতে হবে। ডাক্তারদের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আধুনিক ও উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল, যন্ত্রপাতি ও চিকিৎসকের ব্যবস্থা করতে হবে। এর জন্য বাজেটে চিকিৎসা খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে বাজেট বৃদ্ধি করতে হবে, এতে করে দেশ উন্নয়নের দিকে আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে।
দেশে নির্ভরযোগ্য চিকিৎসায় বিশ্বাস সৃষ্টি হলে আশেপাশের দেশ থেকে রোগী এ দেশে চিকিৎসা নিতে আসবে, এতে করে দেশের মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে, অনেক বেকার সমস্যা দূর হবে ও অধিক হারে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হবে। দেশের মানুষের সকল চিকিৎসা দেশেই হলে, কষ্ট লাঘব হবে, কম টাকায় চিকিৎসা পাবে, ও দুঃসময়ে আপনজন কাছে থাকবে, এতে সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা আরও বেড়ে যাবে এবং ভবিষ্যতে করোনা ভাইরাসের মত বিপর্যয় মোকাবিলা করা সহজ হবে। চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য শুধু সরকার নয়, দেশের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসতে হবে।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট
Email- makader958@gmail.com