বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ আজ ৯ জিলহজ বৃহস্পতিবার পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। হাজীদের ‘উকুফে আরাফা’ বা আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের দিন। বিশ্ব মুসলিমের মহাসম্মেলনের দিন।
যদিও এ বছর করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে মাত্র ১০ হাজার লোকের অংশগ্রহণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে হজ পালিত হচ্ছে; যেখানে প্রতি বছর বিশ্বের ১৬০টির বেশি দেশের ২৫ লাখের হাজীর কণ্ঠে উচ্চারিত ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাশারিকালাকা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়ে উঠত মক্কার আরাফার আকাশ বাতাস।
আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করাই হজের মূল কাজ। এই ময়দানে আজ ধ্বনিত হবে ‘লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়ালমুলক।’ (আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার)। আজ কাবা শরিফে নতুন গিলাফও পরানো হবে। এ বছর শুধু সউদী নাগরিকদের অংশগ্রহণে পবিত্র হজ পালিত হচ্ছে।
এবার সউদী আরবের বাইরের কোনো দেশ থেকে হজে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না কেউ। মহামারি করোনার কারণে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এবার যাঁরা হজ করছেন, তাঁরা আজ সূর্যাস্তের আগপর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে মহান আল্লাহর জিকিরে মশগুল থাকবেন। মিনায় শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সর্বোচ্চ ৫০ জন একত্রে পাথর নিক্ষেপ করতে পারবেন। নিক্ষেপের নুড়িপাথর হজ কর্তৃপক্ষ বিশেষ ব্যাগের মাধ্যমে সরবরাহ করবে।
গতকাল বুধবার মিনায় যাওয়ার মাধ্যমে শুরু হয় হজের কার্যক্রম। কোনো হজযাত্রীকে এবার কাবা শরিফ স্পর্শ করতে দেওয়া হচ্ছে না। যথাযথ দূরত্ব বজায় (১.৫ মিটার বা ৫ ফুট) রেখে তাওয়াফ, নামাজে অংশগ্রহণ, সাঈসহ হজের সব কার্যক্রম পালন করতে হচ্ছে।
আরাফাত ময়দানের তিন দিক পাহাড়বেষ্টিত। মাঝে দুই মাইল দৈর্ঘ্য ও দুই মাইল প্রস্থের এই সমতল ভূমি। হাজিরা আজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতে অবস্থানের পর মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করবেন। রাতে সেখানে অবস্থান করবেন। শয়তানের প্রতিকৃতিতে পাথর নিক্ষেপের জন্য প্রয়োজনীয় পাথর সংগ্রহ করবেন সেখান থেকে।
মুজদালিফায় ফজরের নামাজ আদায় করে হাজিরা মিনায় ফিরবেন। মিনায় বড় শয়তানকে সাতটি পাথর মারার পর পশু কোরবানি দিয়ে মাথার চুল ছেঁটে (ন্যাড়া করে) গোসল করবেন। সেলাইবিহীন দুই টুকরা কাপড় বদল করবেন। এরপর স্বাভাবিক পোশাক পরে মিনা থেকে মসজিদুল হারামে গিয়ে কাবা শরিফ সাতবার তাওয়াফ করবেন।
কাবার সামনের দুই পাহাড় সাফা ও মারওয়ায় ‘সাঈ’ (সাতবার দৌড়াবেন) করবেন। সেখান থেকে তাঁরা আবার মিনায় যাবেন। মিনায় যত দিন থাকবেন, তত দিন তিনটি (বড়, মধ্যম, ছোট ) শয়তানকে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করবেন।