পানি বাড়ছে দক্ষিণে, উত্তরে অনিশ্চিত জীবন

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ এমনিতেই তিন দফা বন্যায় লন্ডভন্ড হয়ে গেছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলের ৩৩ জেলার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। অধিকাংশ এলাকার পানি নামলেও টানা বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে হিমশিম খাচ্ছে বানভাসিরা। এর মধ্যে ভারী বর্ষণ ও অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে এবার প্লাবিত হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকা। বন্যা ও ভাঙনে অন্তত চার হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হয়েছে বলে এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে জানা গেছে। গত মঙ্গলবার রাতেও মাদারীপুরের শিবচরে একটি দ্বিতল স্কুলভবন পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে।

এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্যও বলছে, সারা দেশে বন্যার পানি নামতে শুরু করলেও এখনো চারটি স্টেশনের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। যমুনা, আত্রাই, ধলেশ্বরী ও পদ্মা নদীর পানি এখনো ১০ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গঙ্গা নদীর পানি সমতল থেকে বাড়ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুরের নিম্নাঞ্চল বন্যায় স্থিতিশীল থাকবে।

এদিকে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি তিন সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ছয় সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে বন্যাকবলিত এলাকার হাজার হাজার মানুষ ঘুরে দাঁড়ানোর আগেই ফের বন্যার কবলে পড়তে যাচ্ছে। এরই মধ্যে চরাঞ্চলের শতাধিক একর জমির বীজতলা ও সবজিক্ষেত তলিয়ে গেছে। নতুন করে পানি বাড়তে থাকায় আগের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে পদ্মা নদীর পানি বেড়ে এলাকার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির ফের অবনতি হয়েছে। উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সূত্র জানিয়েছে, গতকাল বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে চার সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে নদী তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চল নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে আছে উপজেলার দেবগ্রাম, দৌলতদিয়া, ছোটভাকলা ও উজানচর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম।

এদিকে কুড়িগ্রামে সব নদ-নদীর পানি বিপদসীমার নিচে থাকলেও দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় ফসলহানি ও নদীভাঙনের কারণে বিপাকে পড়েছে কয়েক লাখ মানুষ। এখনো অনেক এলাকায় আমনের জমি ডুবে আছে পানিতে। কোথাও কোথাও বালুতে ঢেকে গেছে ধানি জমি। ফলে বিপুল পরিমাণ জমি অনাবাদি থাকার শঙ্কা রয়েছে।

Print Friendly

Related Posts