বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ মুক্তিযুদ্ধকালীন ৪ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার ও বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) চিত্ত রঞ্জন দত্ত (সি আর দত্ত) বীরউত্তমের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর রাজারবাগ কালীমন্দির শ্মশানে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয় জাতির এই কৃতী সন্তানের।
মেজর জেনারেল (অব.) সি আর দত্তের মরদেহ সেখানে পৌঁছলে সেনাবাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। পরে সেখানেই তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
ইচ্ছে ছিলো প্রিয় মাতৃভূমিতেই হবে তার শেষ বিদায়ের কাজ। সেই ইচ্ছের প্রতি সম্মান জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার সিআর দত্তের মরদেহ দেশে আনা হয়।
মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে বনানী ও ঢাকেশ্বরী মন্দিরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বিদায় জানানো হয় বীর মুক্তিযোদ্ধাকে।
শ্রদ্ধা জানান পরিবারের স্বজন, সাবেক সহকর্মী, সামাজিক রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক নানা সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনতা। দুপুরে সবুজবাগ বদরেশ্বরী শ্মশানে দাহ করা হয় ৭১ এর বীর এ সেক্টর কমান্ডারকে।
বিউগলের করুণ সুরে বাংলাদেশ শ্রদ্ধা জানালো এক দেশপ্রেমিককে। ৭১ এর বীর মুক্তিযোদ্ধাকে।
রাষ্ট্রীয় সম্মানের পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষের ভালোবাসা আর শ্রদ্ধার ফুলে ঢেকে যায় জাতীর এই বীর সন্তানের মরদেহ।
মঙ্গলবার সকাল ৮ টায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে আনা হয় সিআর দত্তের মরদেহ। শ্রদ্ধা জানান রাজনীতিবিদসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ।
এর আগে সিএমএইচএর হিমঘর থেকে তাঁকে নেওয়া হয় নিজ বাসা বনানীর ডিওএইচএস এর মাঠে। সেখানে সাবেক ও বর্তমান সেনাকর্তারা ছাড়াও শ্রদ্ধা জানান বেসামরিক অনেকে।
ঢাকেশ্বরী মন্দিরে বাবাকে শেষবারের মতো দেখেন তাঁর চার সন্তান। পরে মরদেহবাহী গাড়ি রওয়ানা দেয় সবুজবাগ শ্মশানের দিকে। এখানে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, সেনাবাহিনী ও বিজিবির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। আকাশে বন্দুক উঁচিয়ে দেওয়া হয় হলি ফায়ার।
গত ২৫ আগস্ট বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিশ্বাস ত্যাগ করেন বীর উত্তম সি আর দত্ত। তার বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর।
সি আর দত্তের জন্ম ১৯২৭ সালের ১ জানুয়ারি আসামের শিলংয়ে। তার পৈতৃক বাড়ি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশি গ্রামে। তার বাবার নাম উপেন্দ্র চন্দ্র দত্ত এবং মায়ের নাম লাবণ্য প্রভা দত্ত।
মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য চিত্ত রঞ্জন (সি আর) দত্ত বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত হন। ঢাকার কাঁটাবন থেকে কারওয়ানবাজার সিগন্যাল পর্যন্ত সড়কটি ‘বীরউত্তম সি আর দত্ত’ সড়ক নামে নামকরণ করা হয়।
তিনি বাংলাদেশ রাইফেলসের সাবেক মহাপরিচালক, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনের সাবেক চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতিও ছিলেন তিনি।