বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ দেশে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের ১৮০তম দিনে নতুন করে ২ হাজার ১৫৮ জনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ৩২ জন মারা গেছেন। এসময়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৯৬৪ জন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ১৮০তম দিন পার করল বাংলাদেশ। ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকার দেশে ২৬ মার্চ থেকে বিভিন্ন মেয়াদে ছুটি ঘোষণা ও ছুটি বাড়ানোর মধ্যে দিয়ে সর্বশেষ ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ছিল। দেশের ইতিহাসে দীর্ঘ এ ছুটির পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে ৩১ মে থেকে অফিস-আদালত খোলা হয়। এরপর থেকে গণপরিবহন, ব্যাংক, ব্যবসা-বাণিজ্যস্থল সবই সীমিত আকারে খুলতে থাকে। এরপরে ১ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিনোদন কেন্দ্র ছাড়া মোটামুটি সবই স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে চলছে। যা সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও ‘নিউ নরমাল লাইফ’ হিসেবে অভিহিত হচ্ছে।
করোনার ১৮০তম দিনে নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও ২ হাজার ১৫৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত ৩ লাখ ১৯ হাজার ৬৮৬ জন। মোট পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণ শনাক্তের হার ২০.০৮ শতাংশ। নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন ৩২ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৪ হাজার ৩৮৩। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যু হার ১.৩৭ শতাংশ।
আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যাকে ছাড়িয়ে বেশিরভাগ মানুষ সুস্থ হয়ে উঠছে এই মরণঘাতি রোগ থেকে। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত সুস্থ হওয়ার সংখ্যা ২ লাখ ১৩ হাজার ৯৮০। করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৬৬.৯৩ শতাংশ। যা ইতিবাচক বলে আমরা মনে করি।
মার্চ-এপ্রিল মাসের পর থেকে করোনার ছয় মাসে শহুরে নাগরিকদের একটি অংশ কর্মহীন হয়ে বা রোজগার কমে যাওয়ায় গ্রামমুখী হয়েছে। প্রথম তিনমাস নেতিবাচক ধারা থাকলেও ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে রপ্তানি বাণিজ্য। প্রবাসী শ্রমিকদের অনেকে কাজ হারালেও মহামারির হতাশাকালে আশা জাগিয়ে রেখেছে রেমিট্যান্স প্রবাহ।
দেশের মানুষের মুখে মাস্ক না থাকলে বোঝার উপায় নেই সময়টা করোনা মহামারীর। জীবন-জীবিকার তাগিদে ‘নিউ নরমাল লাইফ’এ অভ্যস্ত হয়ে উঠছে মানুষ। করোনার চিকিৎসায় আগেরমতো হাহাকার নেই, কর্ম তৎপরতা মোটামুটি স্বাভাবিকসহ রাজধানীর আর সব জায়গাই ফিরে পেয়েছে তার চিরচেনা রূপ। পুরোদেশও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে আগের মতো।
এই ৬ মাসে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ডাক্তার-পুলিশ-সাংবাদিক মৃত্যুবরণ করেছেন করোনাকালে দায়িত্ব পালনের সময়, সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে জাতি তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে। আমাদের আশাবাদ, হয়তো আর কিছু দিনের মধ্যেই করোনার ভ্যাকসিন বাজারে আসবে ও মানুষের সচেতনতায় এইদেশসহ সারাবিশ্ব থেকে দূর হবে এই ঘাতক ব্যাধি।