বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ সিলেটের মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজের একটি ছাত্রাবাসে গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এজন্য সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের সমন্বয়ে একটি কমিটি করে দিয়েছেন আদালত।
কমিটিকে আগামী ১৫দিনের মধ্যে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এমসি কলেজে গণধর্ষণের ঘটনায় বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে এনে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মাদ মেসবাহ উদ্দিন এ বিষয়ে আদেশের আরজি জানান।
বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ এই আদেশ দেন।
আদালত তার রুলে গণধর্ষণের শিকার তরুণীকে রক্ষায় অবহেলা ও অছাত্রদের কলেজে অবস্থান বিষয়ে নীরবতার জন্য অধ্যক্ষ ও হোস্টেল সুপারের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়েছেন।
শিক্ষাসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, এমসি কলেজের অধ্যক্ষ, হোস্টেল সুপারসহ বিবাদীদের দুই সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে হাইকোর্ট আগামী ১৮ অক্টোবর এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন।
ভার্চুয়াল শুনানিতে যুক্ত ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মাদ মেসবাহ উদ্দিন। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
গত শুক্রবার এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন এক তরুণী। স্বামীকে মারধর করে তাকে ছিনিয়ে ছাত্রাবাসে নিয়ে যায় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী।
স্ত্রীকে বাঁচাতে স্বামী তাদের পিছু পিছু গেলে তাকে বেঁধে রেখে ছাত্রলীগের ওই নেতাকর্মীরা তরুণীকে গণধর্ষণ করে।
পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ কলেজের ছাত্রাবাস এলাকা থেকে ধর্ষণের শিকার তরুণী এবং তার স্বামীকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
পরদিন ওই ঘটনায় ছাত্রলীগের ৯ জন নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
তারা হলেন; এমসি কলেজ ছাত্রলীগের নেতা ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সে শিক্ষার্থী শাহ মাহবুবুর রহমান রণি, একই শ্রেণীতে অধ্যয়নরত ছাত্রলীগ নেতা মাহফুজুর রহমান মাছুম, ছাত্রলীগ কর্মী এম সাইফুর রহমান, অর্জুন লস্কর এবং বহিরাগত ছাত্রলীগ নেতা রবিউল ও তারেক।
মামলায় ৬ জনকে সরাসরি জড়িত বলে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অন্য ৩ জনের বিরুদ্ধে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়।
গণধর্ষণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়াও কলেজর দুই দারোয়ানকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।