বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ ২০২০ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। অনেক বিচার বিশ্লেষণ করে এইচএসসি পরীক্ষা সরাসরি না নিয়ে ভিন্ন পদ্ধতিতে মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়।
বুধবার এইচএসসি পরীক্ষা বিষয়ে ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব সিদ্ধান্ত জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, জেএসসি এবং এসএসসি’র ফলাফলের ভিত্তিতে তাদের এইচএসসি’র ফলাফল নির্ধারণ করা হবে।
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে পরীক্ষা না নিয়ে অষ্টমের সমাপনী এবং এসএসসির ফলের ভিত্তিতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
পরীক্ষা হলে আরও ভালো ফল হত বলে কোনো কোনো পরীক্ষার্থী আশা করলেও মাথা থেকে দীর্ঘদিনের ‘বোঝা’ নেমে যাওয়ার হাঁফ ফেলছেন তারা।
শিক্ষাবিদরা বলছেন, দুটি পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলের সঙ্গে একাদশ ও দ্বাদশের শ্রেণি মূল্যায়নকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারলে এই মূল্যায়নটা আরও ভালো হত।
গত ১ এপ্রিল এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর কথা থাকলেও করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে তা আটকে যায়।
এরপর প্রাথমিক সমাপনী, জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত হলেও এইচএসসি ঝুলেই থাকে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও বলছিলেন, পরিস্থিতি ভালো হলেই পরীক্ষাটি নিয়ে নেবেন তারা।
কিন্তু তা কবে হবে, তেমন কোনো ধারণা না পেয়ে উৎকণ্ঠায় ছিলেন প্রায় ১৪ লাখ পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।
সেই উৎকণ্ঠার অবসান ঘটিয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বুধবার জানান, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা এবার হবে না, অষ্টমের সমাপনী ও এসএসসির ফলের ভিত্তিতে উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে।
ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সংগঠন ‘অভিভাবক ঐক্য ফোরাম’ এর সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু এই সিদ্ধান্তের জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, “আমরা চাই শুধু পরীক্ষা নয়, করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা যাবে না এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি’ও নেওয়া যাবে না।”
মহামারীর মধ্যে পরীক্ষা নেওয়ার সময় কোনো শিক্ষার্থীর ক্ষতি হলে তার দায় সরকারের ওপর পড়ত বলে মনে করেন তিনি।
মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম এইচএসসি পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।
এইচএসসি পরীক্ষা হলে ফল আরও ভালো বা খারাপ হত কি না, এখন আর সেসব নিয়ে চিন্তা করতে চাইছেন না এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা।
তারা বলছেন, গত ছয় মাস ধরে যে ‘বোঝা’ মাথায় নিয়ে ছিলেন তার অবসান হওয়ায় এখন মানসিকভাবে চিন্তামুক্ত হতে পেরেছেন।