ইফতেখার শাহীন: বরগুনায় সুদের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় সুদ ব্যবসায়ীর অপমানে আত্মহত্যা করেছেন পলাশ (৩৭) নামের এক বস্ত্র ব্যবসায়ী।
শনিবার সকালে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের নলী বাজারে এ ঘটনা ঘটে। বাসার পেছনে মেহগনি গাছে গলায় ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন। পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করেছে।
আত্মহননকারী বেলাল হোসেন পলাশ নলটোনা ইউনিয়নের গর্জনবুনিয়া এলাকার মৃত শাহজাহান হাওলাদারের ছেলে। তিনি নলী বাজারে কাপড়ের ব্যবসা করতেন।
পলাশের পরিবার জানায়, ২০১৫ সালে বরগুনার পল্লী চিকিৎসক সুদ ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম সৌরভের কাছ থেকে প্রথমে তিনলাখ টাকা সুদে নেন পলাশ। এরপর পর্যায়ক্রমে সৌরভের কাছ থেকে সাড়ে সাত লাখ টাকা তিনি সুদে নেন। সৌরভের আসল সাত লাখের বিপরীতে পলাশ ১১ লাখ টাকা সুদ পরিশোধ করেছেন। এরপরও আসল টাকার ২৬ হাজার টাকার কিস্তি পরিশোধের জন্য পলাশকে চাপ দেন সৌরভ। গত বুধবার সৌরভকে ওই টাকা পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু টাকা পরিশোধ না করায় বৃহস্পতিবার পলাশকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন সুদ ব্যবসায়ী সৌরভ। এক পর্যায়ে অনুনয় বিনয় করে শনিবার পর্যন্ত সময় নেন পলাশ। শনিবার ফজরের নামাজের পর সৌরভ টাকা চেয়ে পলাশকে ফোনে গালিগালাজ করেন। এরপর অপমানে লজ্জায় ঘৃণায় ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন পলাশ। সাড়ে সাতটার দিকে আবারো পলাশের মুঠোফোনে কল করে টাকা চায় সৌরভ। পলাশের স্ত্রী রোখসানা ফোন রিসিভ করে সৌরভকে জানায়, পলাশ আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনার পর ফোন বন্ধ করে গা ঢাকা দিয়েছে পল্লী চিকিৎসক জহিরুল ইসলাম সৌরভ। সৌরভের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে পলাশের মরদেহ উদ্ধার করে। এসময় মৃত পলাশের জামার পকেট থেকে চিরকুট উদ্ধার করা হয়। এতে সুদের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় অপমানে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন মর্মে লিখে গেছেন।
মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুুলিশ।
বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মোঃ শহীদুল ইসলাম মিলন জানান, এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের পরিবার অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।