রাস্তার ইট খুলে নিলেন ইউপি চেয়ারম্যান, তোলপাড়

জাকির হোসেন বাদশা: চাঁদপুরের মতলব উত্তরে হেরিংবন রাস্তার ইট খুলে নিয়েছেন এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। উপজেলার ফতেপুর পুর্ব ইউনিয়নের বারহাতিয়া গ্রামে এ ঘটনায় স্থানীয় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এলাকার মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, ফতেপুর পুর্ব ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বারহাতিয়া মেইন রোড হতে গ্রামের ভিতর হয়ে কাঁঠাল বাগান পর্যন্ত ২.৫ কিলোমিটার সড়ক থেকে ইট খুলে নিয়েছে একদল লোক।

গ্রামবাসী জানান, গতকয়েকদিন ধরে ইউপি চেয়ারম্যান আজমল হোসেন চৌধুরীর লোকজন এসে ইট খুলে নিচ্ছে। গ্রামবাসী জানতে চাইলে চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলতে বলে তারা।

স্থানীয় নবীর হোসেন, মমিন, অটোচালক মামুন, ইয়াছিন প্রধান ও হারুন প্রধান বলেন, সরকারি রাস্তা থেকে চেয়ারম্যানের লোকজন ইট খুলে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তারা বলে আমরা কিছু জানিনা, আজমল চেয়ারম্যান ইট খুলে নিয়ে যেতে বলছে। চেয়ারম্যানের লোকজন এর বেশি কিছু বলেননি। ইট নিয়ে যাওয়ায় আমাদের গ্রামের এই একমাত্র প্রধান সড়কটি অচল হয়ে গেল।

স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহজাহান সরকার বলেন, গত ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে আমাদের গ্রামের ২.৫ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা ইটের হেরিংবন কাজ করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়। দুই বছর ধরে আমাদের এই সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করছি। কিন্তু হটাৎ করে কয়েকদিন ধরে চেয়ারম্যান ইট খুলে নিয়ে যাচ্ছে। প্রায় দেড় লাখ ইটের বিনিময়ে রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী করা হয়েছিল।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী সালাউদ্দিন, ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সভাপতি জয়নাল আবেদীন ও ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আবুল হাসনাত বলেন, রাস্তার কাজ হয়ে গেলে এটা রাষ্ট্রের সম্পদ হিসেবে রুপান্তরিত হয়ে যায়। এই রাস্তায় বা বাস্তার মালমালে কেউ অবৈধভাবে হাত দিতে পারে না। স্থানীয় ইউপি সদস্য মোস্তাক কাজী বলেন, এভাবে রাস্তার ইট খুলে নেয়া ঠিক হয়নি। এতে করে আমার ওয়ার্ডের জনগণের চলাচলে অনেক অসুবিধা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে ফতেপুর পুর্ব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজমল হোসেন চৌধুরী বলেন, সরকারের উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে ফতেপুর পূর্ব ইউনিয়নকেও গড়ে তোলা হচ্ছে। সেই লক্ষ্যে ইউনিয়নের প্রতিটি সড়ক পাকাকরণ হবে। তাই ওই সড়কের ইঠ উঠানো হয়েছে। দ্রুত এই সড়কটি পাকাকরণ হবে।

এদিকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আওরঙ্গজেব বলেন, রাস্তার ইট নেয়া তো দুরে থাকে, হাত দেয়ার ক্ষমতাই কারো নেই। আমি সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করবো। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্নেহাশীষ দাশ বলেন, এ ব্যাপারে তদন্তপুর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts