টাঙ্গাইলে সাবেক পৌর মেয়র মুক্তির জামিন নামঞ্জুর

আরিফুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় সাবেক পৌর মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (২ ডিসেম্বর) বিকেলে এ আদেশ দেন টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সিকান্দার জুলকার নাইন ।

সহিদুর রহমান খান মুক্তি টাঙ্গাইল-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খানের ছেলে ও সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার ছোট ভাই। দীর্ঘ ছয় বছর পলাতক থাকার পর আজ সকালের দিকে হঠাৎ প্রথম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তি‌নি। প‌রে বিকাল ৩টার পর আদালত তার জা‌মিন নামঞ্জুর ক‌রে কারাগা‌রে পাঠা‌নোর নি‌র্দেশ দেন।

এসময় তার সাথে ছি‌লেন টাঙ্গাইল-৩ আসনের সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খান ও তার ভাই সা‌বেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা।

টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত সরকারি কৌসুলি (পিপি) মনিরুল ইসলাম খান জানান, সকাল পৌনে ১১টার দিকে সহিদুর রহমান তার বাবা সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খান ও ভাই সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানাকে সঙ্গে নিয়ে টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে উপস্থিত হন। এ সময় তারা আদালত কক্ষের ভিতর অবস্থান নিয়ে আত্মসমর্পণের কাগজপত্র জমা দেন। পরে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিকেল ৩টার দিকে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অতিরিক্ত সরকারি কৌসুলি মনিরুল ইসলাম ও আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন আব্দুল বাকী মিয়াসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী। বাদী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন মো. রফিকুল ইসলাম।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিনদিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে গোয়েন্দা পুলিশ রাজা ও মোহাম্মদ আলী নামের দুইজনকে ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে গ্রেফতার করে। ওই দুই আসামির জবানবন্দিতে এই হত্যার সাথে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা এবং তার অপর তিন ভাই পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার বিষয়টি বের হয়ে আসে। তারপরেই আমানুর ও সহিদুরসহ চার ভাই আত্মগোপনে চলে যান। পরবর্তীতে আমানুর ২২ মাস পলাতক থাকার পর আদালতে আত্মসর্মপণ করেন। প্রায় দুই বছর হাজতে থাকার পর তিনি জামিনে মুক্ত পান। তবে তার অপর দুই ভাই কাকন ও বাপ্পা এখনো পলাতক রয়েছেন। আদালতে এ হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।

 

Print Friendly

Related Posts