বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ ভারতের মিজোরাম রাজ্যের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সশস্ত্র আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আস্তানার উপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম।
এই আস্তানাগুলো ধ্বংস করার জন্য তিনি বিএসএফ মহাপরিচালকের অনুরোধ করেন।
ভারতের গৌহাটিতে অনুষ্ঠিত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) মধ্যে মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫১তম সীমান্ত সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য তুলে ধরেন।
শুক্রবার দুপুরে বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫১তম সীমান্ত সম্মেলনের যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিএসএফ মহাপরিচালক রাকেশ আস্থানা পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ভারত সরকারের ‘জিরো টলারেন্স নীতি’র কথা উল্লেখ করে বলেন: ঐসব আস্তানার (যদি থাকে) বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়াও তিনি সীমান্তে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিজিবি ও বিএসএফ এর সমন্বিত যৌথ কার্যক্রমে সন্তুষ্টি প্রকাশ করতে সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা (সিবিএমপি) কার্যকরভাবে বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের সারসংক্ষেপ
বিজিবি মহাপরিচালক সীমান্তে বিএসএফ/ভারতীয় নাগরিক/দুর্বৃত্ত কর্তৃক বাংলাদেশের নিরস্ত্র নাগরিকদের হত্যা/আহত/মারধরের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্তবর্তী এলাকায় যৌথ টহল পরিচালনা বৃদ্ধি, জনসচেতনতামূলক কর্মসূচী আরও বেগবান করা, যথার্থ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গ্রহণসহ সীমান্তে অতিরিক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণে উভয় পক্ষ সম্মত হয়েছে।
বিএসএফ মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সর্বদা দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার সম্পর্কের প্রশংসা করে এবং তারা প্রত্যাশা করে যে, বিজিবি এবং বিএসএফ সীমান্ত হত্যার ঘটনা শূন্যে নামিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। তিনি মানবাধিকারকে সমুন্নত রাখতে এবং অপরাধীদেরকে হত্যার পরিবর্তে নিজ নিজ দেশের প্রচলিত আইনের আওতায় আনার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানান।
সীমান্তে হত্যার ঘটনা অদূর ভবিষ্যতে উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে বলে বিএসএফ মহাপরিচালক আশ্বাস প্রদান করেন। সীমান্তে মানবাধিকার রক্ষা ও সহিংসতা রোধে যৌথ প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে উভয় পক্ষই সীমান্তে জনসচেতনতা কর্মসূচি জোরদারকরণ, দুর্গম অঞ্চলে যথাযথ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গ্রহণসহ সমন্বিত টহল বৃদ্ধি করে সীমান্তে অতিরিক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণে সম্মত হয়।
বিজিবি মহাপরিচালক সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা (সিবিএমপি) এর ওপর গুরুত্বারোপ করে বিভিন্ন ধরণের আন্তঃসীমান্ত অপরাধ যেমন-মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্য বিশেষ করে ইয়াবা পাচার, আগ্নেয়াস্ত্র চোরাচালান, গবাদি পশু, জালমুদ্রা, স্বর্ণ প্রভৃতি চোরাচালানের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং এসকল অপরাধ দমনের জন্য বিএসএফ’র সহযোগিতা কামনা করেন।
বিএসএফ মহাপরিচালক বলেন, অবৈধ মাদক পাচারের ফলে উভয় দেশের যুব সমাজের মধ্যে মাদকাসক্তি মারাত্মকভাবে বেড়েছে যা উভয়ের জন্যই বিপদজনক এবং এটাকে কার্যকরভাবে মোকাবেলা করা দরকার। এ ব্যাপারে উভয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী উপকৃত হবে চোরাকারবারীদের সম্পর্কিত এমন তাৎক্ষণিক ও দরকারী তথ্য পরস্পরের মধ্যে আদান-প্রদান এবং প্রয়োজনে যৌথ অভিযান পরিচালনার ব্যাপারে উভয় পক্ষ সম্মত হয়।