জ.ই বুলবুল: সমমনা মানবিক সাংবাদিকদের সংগঠন ‘ডিয়ার জার্নালিস্ট’র উদ্যোগে রোববার (১০ জানুয়ারি) রাজধানীর সেগুনবাগিচার বাগিচা রেস্টুরেন্টে ‘আড্ডা ও সাংবাদিকতার ঝুঁকি : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক সমিতি (বানাসাস)’র সভাপতি নাসিমা সোমা।
‘ডিয়ার জার্নালিস্ট’র এডমিন খন্দকার হাফিজুর রহমানের (বিপ্লব রেজা) সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে ‘সাংবাদিকতার ঝুঁকি : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সেন্টার ফর এডভান্সড রিসার্চ ইন আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস-এর রিসার্চ ফেলো ও ঢাবির সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি হাসান নিটোল।
সভায় চলতি বছর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় দৈনিক বাংলাদেশের আলো পত্রিকার যুগ্ম বার্তা সম্পাদক আনজুমান আরা শিল্পী এবং সর্বোচ্চ ভোটে ক্র্যাবের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ায় মানবজমিনের রুদ্র মিজানকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রবন্ধের ওপর অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক মো. রুহুল কুদ্দুস সরকার, নজরুল ইসলাম বশির, নাজিম মাহমুদ হাসান, সাজু আহমেদ, জাহিদ মামুন, এস এম সামসুল হুদা, মো. জুয়েল হাসান জনি, তাহমিনা শিল্পী, এম এ মামুন মিয়া, মোয়াজ্জেম হোসেন, মনির আহমেদ জারিফ, জাফরুল আলম, নাসরীন গীতি, শামসুদ্দিন হীরা, জ,ই বুলবুল, মাসুদ রানা ও একরামুল ইসলাম বিপ্লব।
গবেষক হাসান নিটোল বলেন, ‘সাংবাদিকতার ঝুঁকি সবসময়ই ছিলো আছে এবং থাকবে। এটা শুধু বাংলাদেশে নয় সব দেশে সব কালেই এই ঝুঁকি ছিলো এবং থাকবে। কম আর বেশি এই যা। সাংবাদিকতার ঝুঁকি নিয়ে যদি বলতে হয় তাহলে প্রথমেই বলতে হবে এটি একটি মননশীল ও সৃজনশীল পেশা। এই পেশা সবার জন্যে নয়। যাদের লেখালেখির অভ্যাস আছে এবং যাদের লেখা পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায় কেবল তাদের জন্যই এই পেশা। যাদের লেখালেখির অভ্যাস নেই শুধুমাত্র ভোট বাড়ানোর অথবা নিজের কর্মী তৈরির জন্য যেসব সিনিয়র সাংবাদিক অযোগ্য জুনিয়রদের এ পেশায় টেনে আনছেন। তারা এ পেশাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
আধুনিক সাংবাদিকতায় চাকরি হারানোর ভয় এই পেশার অন্যতম একটি ঝুঁকি। পৃথিবীর সব দেশেই করোনাকালে এই ঝুঁকি আরো বেড়ে গেছে। বাংলাদেশে বিরাজমান বেসরকারি যে কোন পেশার চেয়ে সাংবাদিকতা পেশা অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বেসরকারি ব্যাংকের চাকরির যতটা নিশ্চয়তা বাংলাদেশে আছে, সাংবাদিকদের তাও নেই। কিন্তু ভালো মানের সাংবাদিকতা পেতে হলে চাকরির নিশ্চয়তা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। কেউ চাকরি হারানোর ভয় মাথায় নিয়ে সত্য কথা লেখা বা ভালো লেখা তৈরি করার যুদ্ধটা চালিয়ে নিতে পারে না। অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি করার জন্য যে সময়, একাগ্রতা এবং মনসংযোগ দরকার তা একজন চাকরি হারানো ভয়ে থাকা মানুষের পক্ষে কখনোই সম্ভব নয়। তাই এটি দূর করতে হবে। এই দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। এই দায়িত্ব মালিককেও নিতে হবে।