কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বুধবার সংঘর্ষে নিহত ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী সবুজ আলীর লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স ঘিরে বিক্ষোভ করেছেন নেতাকর্মীরা। বুধবার দুপুরে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে এ বিক্ষোভ হয়।
এর আগে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে সবুজ আলীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ এবং বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
জানাজায় অংশ নিয়ে সবুজের বড় ভাই নুরুন্নবী এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার দাবি করেন। জানাজা শেষে সবুজের মরদেহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
পরে সবুজের মরদেহ তার নিজ এলাকা নীলফামারীর সদর উপজেলার উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মরদেহ দাফনের কথা রয়েছে।
এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্কে হল ছাড়ছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।
বুধবার সকাল থেকে বিজয় একাত্তর হল, রোকেয়া হল, কবি জসীম উদ্দিন হলসহ প্রায় সব হল থেকেই অনেক শিক্ষার্থীকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়। পরিবেশ স্বাভাবিক হয়ে ক্যাম্পাসে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন তারা।
কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলন, দফায় দফায় সংঘর্ষের পর মঙ্গলবার রাতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখা ও শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল ছাড়ার বিষয়ে নির্দেশনা দিতে উপাচার্যদের চিঠি দেয় ইউজিসি। এ জন্য বুধবার বিকেল ৫টার পর ঢাবির হল এলাকায় অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ সময় পুলিশ মাইকিং করে ছাত্র-ছাত্রীদের হল থেকে দ্রুত বের হওয়ার আহ্বান জানান।
পুলিশ বলছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে হল ছেড়ে চলে যেতে হবে। তা না হলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।
এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থীদের গায়েবানা জানাজা ঘিরে ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গায়েবানা জানাজার পর কফিন মিছিল শুরু হলে শিক্ষার্থীদের মিছিল লক্ষ করে একের পর এক সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে।
বুধবার (১৭ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে সবশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সেখানে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেলও ছুড়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।
এর আগে ঢাবির ভিসি চত্বরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের গায়েবানা অনুষ্ঠিত হয়। ভিসি চত্বরে কফিন রাখা হয়। তাতে লাল সবুজের পতাকা দেওয়া হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা কাতারবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে স্লোগান দেন। এ সময় ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। এছাড়া তারা হল বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ‘হল আমাদের বাড়িঘর, হল আমরা ছাড়ব না’ স্লোগান দিতে থাকেন।