নতুন বাংলাদেশ গড়তে চা্ন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এজন্য সকলের সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, দুর্নীতির কারণে দেশের সব শেষ হয়ে গেছে। বিচার বিভাগ ভেঙে পড়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। পাতানো নির্বাচন হয়েছে। ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে তরুণ সমাজ বেড়ে উঠেছে। রাজনৌতিক প্রভাবে ব্যাংক ডাকাতি হয়েছে। ঠিক করতে সময় লাগবে। আশা করি, নতুন বাংলাদশ তৈরিতে সবাই পাশে থাকবেন। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশে কর্মরত বিভিন্ন মিশনের কূটনীতিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে এ ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারসহ জাতিসংঘ এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রধানরা ব্রিফিংয়ে উপস্থিত রয়েছেন। নতুন সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর ড. ইউনূসের প্রথম কূটনীতিক ব্রিফ এটি।
ব্রিফংয়ে ড. ইউনূস বলেন, ক্ষমতায় টিকে থাকতে শেখ হাসিনা সরকার সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে। এই সরকারের অগ্রাধিকার হলো- আইনশৃঙ্খখলা বাহিনীর দ্বারা সমাজে শান্তি ফিরিয়ে আনা।
তিনি বলেন, ছাত্র আন্দোলনে শত শত মানুষ মারা গেছে। হাজারও মানুষ আওয়ামী লীগ ও তার দলবলের দ্বারা আহত হয়েছে। অনেক ছাত্র চোখে গুলি খেয়েছে, আমি তাদের দেখতে গিয়েছিলাম। আমরা জানি না, ওদের কি হবে। পৃথিবীর কোনো দেশের ছাত্রদের এত ত্যাগ করতে হয়নি। পৃথিবীর কোথাও নাগিরকেরা এতটা মানবাধিকার বঞ্চিত হয়নি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্রের কাছে কৃতজ্ঞ, সংকটকালীন তারা আমাদের সহায়তা করেছে। বর্তমানে একটি চ্যালেঞ্জিং সময় পার করছি। দুই সপ্তাহ হলো বাংলাদেশে দ্বিতীয় বিপ্লব সাধিত হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। তিনি দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের স্বাধীনতার জন্য ছাত্রজনতা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শত শত মানুষ মারা গেছে, হাজার হাজার মানুষ আহত। আমি আশা করি- আপনারা আমাদের সহায়তা করতে পারেন। অনেক শিক্ষার্থী বুলেটের আঘাতে আহত হয়েছেন। অনেকের রাবার বুলেট চোখে লেগেছে।
ড. ইউনূস বলেন, আমি তরুণদের সম্মান জানাই, যারা দেশের জন্য আত্মত্যাগ করেছেন। গণতান্ত্রিক মতপ্রকাশের জন্য তারা আত্মত্যাগ করেছেন। বৈষম্যহীন, বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ চায় তরুণ সমাজ।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হয়। ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নতুন এ সরকার গঠনের পর বিদেশি কূটনীতিকদের একবার ব্রিফ করেছিলেন পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বিদেশি কূটনীতিকদের ওই ব্রিফিংয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতায় আসার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতার প্রত্যাশার কথা জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।