আসামি কোর্টে তোলার আগে মিডিয়ার সামনে নয়

ছয় বছর আগে গাজীপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের সময় গ্রেপ্তার জেএমবি সদস্যের বোমা বিস্ফোরণ ঘটনোর এক মামলার রায়ে বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের বেঞ্চ এই অভিমতসহ রায় দেয়।

রায়ে জেএমবি সদস্য মো. মামুনুর রশিদ ওরফে জাহিদকে নিম্ন আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে হাই কোর্ট। ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ‘দায়িত্ব পালনে উদাসীন ছিলেন’ পর্যবেক্ষণ দিয়ে পুলিশ প্রধানকে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছে আদালত।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি টঙ্গী থানার পুলিশ মামুনুর রশীদ জাহিদসহ জেএমবির চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে পাঁচটি দেশে তৈরি গ্রেনেডসহ বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

বিষয়টি প্রচারের জন্য ওইদিন বিকালে গাজীপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিকরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আসামি জাহিদকে হাতকড়া পরানো অবস্থায় তাদের সামনে আনা হয়।

সংবাদ সম্মেলন শেষে পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বেরিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জেএমবি সদস্য জাহিদ টেবিলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং একটি গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটান। এতে সাংবাদিক ও পুলিশ সদস্যসহ ১৩ জন গুরুতর আহত হয়। ওইদিন রাতে এই জেএমবি সদস্যের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়। মামলার বিচার শেষে ২০১২ সালের ১৩ মার্চ ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।

এই রায়ের বিরুদ্ধে মামুন আপিল করেন; পাশাপাশি তার ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য হাই কোর্টে আসে। শুনানি শেষে আদালত বৃহস্পতিবার আসামির সাজা কমিয়ে রায় ঘোষণা করে।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আসামি মামুনকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করাকে ‘দায়িত্বহীন কাজ’ হিসেবে বর্ণনা করে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিচারক।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts