ফ্রান্সের নতুন প্রেসিডেন্টের ‘অসম প্রেমের’ গল্প

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক দু’জনের বয়সের ব্যবধান ২৫ বছর। সম্পর্কের সূত্রপাতও বেশ অস্বাভাবিকভাবে। ষোল বছরের এক কিশোর প্রেমে পড়েন ৪০ বছর বয়সী এক নারীর, যিনি ছিলেন তিন সন্তানের জননী।

এখানে যার কথা বলা হচ্ছে তিনি হলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী এমানুয়েল ম্যাক্রন। ম্যাক্রনের বর্তমান বয়স ৩৯ এবং তাঁর স্ত্রী ব্রিজিথ তোনিয়ো’র বয়স এখন ৬৪ বছর। ম্যাক্রনের বয়স তখন মাত্র ১৬ – আর সেই সময়েই তিনি ৪১ বছর বয়সী নারীর প্রেমে পড়েন। তবে তাঁর পরিবার এটি থামাতে চেয়েছিল। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। ম্যাক্রনের স্ত্রী একসময় তাঁর স্কুলের নাটকের শিক্ষিকা ছিলেন।

ফ্রান্সের রাজনীতিতে এমানুয়েল ম্যাক্রনের নাটকীয় উত্থান হয়েছে। অথচ স্কুল জীবনে  ম্যাক্রন কখনোই রাজনীতিবিদ হতে চাননি।তিনি চেয়েছিলেন একজন ঔপন্যাসিক হতে। স্কুলে জীবনে তিনি খুবই মেধাবী ছিলেন। ম্যাক্রনের স্কুল শিক্ষিকা এবং বর্তমানে তার স্ত্রী ব্রিজিথ তোনিয়ো ছোট বেলা থেকেই তাকে চেনেন। ব্রিজিথ তোনিয়ো মনে করেন, এমানুয়েল ম্যাক্রন স্কুল জীবনে অন্যদের চেয়ে ব্যতিক্রমী ছিল। ম্যাক্রন যখন ঐ স্কুল ছেড়ে যান, তারপর থেকে তাঁর প্রাক্তন এই শিক্ষিকার সাথে আরো গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ব্রিজিথ তোনিয়ো বলেছেন, ম্যাক্রন স্কুল ছেড়ে যাবার পর তাদের দু’জনের মধ্যে টেলিফোনে দীর্ঘ কথোপকথন হতো। ধীরে-ধীরে শিক্ষিকার মন জয় করেন ছাত্র। দু’জনের মধ্যে যখন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে, তখন শিক্ষিকা ছিলেন বিবাহিতা এবং তিন সন্তানের জননী। আগের স্বামীকে ছেড়ে তিনি ২০০৭ সালে বিয়ে করেন ম্যাক্রনকে।

অনেকদিন ধরেই এ দম্পতি প্রচারণা থেকে দূরে ছিলেন। কিন্তু মি: ম্যাক্রন যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য মনস্থির করেন, তখন তারা অনেক বেশি জনসম্মুখে আসেন। তাদের দু’জনের বয়সের ব্যবধান নিয়ে অনেক কথা শুনতে হয়েছে ম্যাক্রন এবং ব্রিজিথকে। মাঝেমধ্যে এসব সমালোচনার জবাবও দিয়েছেন মি: ম্যাক্রন।

একবার তিনি বলেছিলেন, “বয়সের ব্যবধানটা যদি উল্টো হতো অর্থাৎ আমি যদি আমার স্ত্রীর চেয়ে ২৪ বছরের বড় হতাম, তাহলে বিষয়টিকে কেউ অস্বাভাবিক বলতো না। মানুষ ভিন্ন কিছু দেখে অভ্যস্ত নয়।”

অনেকে বলছেন ম্যাক্রনের প্রেম এবং বিয়ে তাঁর জীবনে ‘আত্মবিশ্বাস’ তৈরিতে একটি প্রভাব ফেলেছে।

ফরাসি একজন সাংবাদিক সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন,  ম্যাক্রন যদি তার চেয়ে ২৪ বছরের বড় এবং তিন সন্তানের এক জননীকে আকর্ষণ করতে পারেন, তাহলে একই উপায়ে তিনি ফ্রান্সকেও জয় করতে পারবেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ম্যাক্রনের জয় হয়তো সে কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts