বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে সংবাদপত্র ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘এদেশে সংবাদপত্র ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় স্বাধীনতা রয়েছে, বাকস্বাধীনতা ও ব্যক্তি স্বাধীনতা রয়েছে। তবে স্বাধীনতা ভোগ করতে হলে দায়িত্বশীল হতে হবে। একজনের যেটা অধিকার, আরেকজনের জন্য সেটা দায়িত্ব। কারো অধিকার ক্ষুণ্ন করার নাম স্বাধীনতা নয়। স্বাধীনতা যদি কেউ ভোগ করতে চায়, তাহলে তাকে সেই দায়িত্ববোধ নিয়েই করতে হবে। এটাই বাস্তবতা।’
গতকাল সোমবার দশম জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সাম্প্রতিক এক রিপোর্টের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘দেশে এখন ৩৪টি টেলিভিশন, ৭৫০টি দৈনিক পত্রিকা রয়েছে। অথচ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, এদেশে নাকি মানুষের বাকস্বাধীনতা নেই। বেসরকারি টেলিভিশনগুলোতে বসে টকশোতে দিন-রাত সরকারের বিরুদ্ধে সমানে কথা বলা হচ্ছে। টকশো, আলোচনায় যে এতো কথা বলা হচ্ছে, কেউ কি তাদের বাধা দিচ্ছে।
তিনি বলেন, কেউ যদি হলুদ সাংবাদিকতা করে, অসত্য তথ্য দেয়, কারো যদি চরিত্র হরণ করা হয়, নিশ্চয়ই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরও অধিকার রয়েছে, সে মিথ্যাচার থেকে নিজেকে রক্ষা করার। কিন্তু এখানে কেউ যদি বলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই, তা ঠিক নয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে কিছু মানুষ রয়েছে, যারা এক সময় মনে করতো দেশে একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি হলে তাদের গুরুত্ব বেড়ে যাবে। গণতান্ত্রিক পরিবেশে এ সুযোগ কম থাকে। তাদের স্বাদ আছে ক্ষমতায় আসার, কিন্তু জনগণের কাছে গিয়ে ভোট চাওয়ার সাধ্য নেই। অনেকে চেষ্টাও করেছেন, কিন্তু জনগণের সাড়া পাননি। জনগণ যদি সাড়া না দেয়, সে দোষ কার? এরাই নানান কথা বলে বেড়াবে, এটাই স্বাভাবিক।’
তিনি বলেন, সংসদ সদস্য থেকে যে কোন সাধারণ মানুষ তার ব্যাপারে অসত্য তথ্য ছাপা হলে তিনি সম্মানহানির মামলা করতে পারেন। তবে কেউ যদি মনে করে যে সে অপরাধী না, তাহলে সে প্রমাণ করবে যে সে অপরাধী না। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের বদনাম করাই তাদের চরিত্র। তারা মনে করে বদনাম করতে পারলেই তারা এসে তাদের নাগরদোলায় চড়িয়ে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। সে আশায় তারা বসে থাকে। কিন্তু সে আশায় গুঁড়েবালি। সেটা আর বাংলাদেশে হবে না।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রশ্নে প্রধান বিচারপতির সাম্প্রতিক এক বক্তব্যের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি জানি না, তিনি কিভাবে এটা বললেন, এদেশে আইনের শাসন নেই, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আছে বলেই একজন নেত্রীর মামলায় ১৪০ দিন সময় দিয়েছে আদালত। আমাদের যদি এ ধরনের মানসিকতা থাকতো তাহলে এটা দিতে পারতো না। একই মামলায় যদি ৪০ বা ৫০ বার রিট হয় এবং তা যদি গৃহীত হয়, তাহলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই কোথায়। স্বাধীনতা না থাকলে এটা হতো না। এটাই বড় দৃষ্টান্ত। আর যারা এ সুযোগ নিচ্ছেন। তারাও এর সাথে তাল মিলিয়ে বলেন, দেশে আইনের শাসন নেই।
সূত্র : বাসস